কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে সিনিয়র পরিচয়ে র্যাগিং ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই শিক্ষাবর্ষের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. সাজিদুর রহমান প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শাহিন, ওবায়দুল্লাহ ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইপেল।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী বলেন, ১০ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমি আমার বান্ধবীকে নিয়ে প্রকৌশল অনুষদের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। এর কিছুক্ষণ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম আবর্তন ও দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহীন ও বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর নিজেরা সিনিয়র সেজে আমাকে র্যাগিং ও গালাগালি করে। একপর্যায়ে শাহীন মারধর করার জন্য এগিয়ে আসে। একসময় সিনিয়র সুলভ আচরণের মাধ্যমে আমাকে হাসির পাত্র বানিয়ে নিজেরা হাসাহাসি করতে থাকে। শেষে তারা বলে, আমরা ১৬ আবর্তনের এবং তুই আমাদের সপ্তম শিকার।
এভাবে হেনস্তার একপর্যায়ে আমি সেখান থেকে চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পর আমি আমার বন্ধু জিসানের খোঁজে আবার গেলে সেখানে জিসানকে খুঁজে না পেয়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আসি। এ সময় আমার পিছুপিছু এসে শাহিন ও ওবায়দুল্লাহ রাস্তা আটকায়। ইতোমধ্যে সেখানে এসে উপস্থিত হয় দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইপেল ও জিসান।
এ সময় ইপেল আমাকে বলে, মেয়ে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরাঘুরি করোস কোন সাহসে। এইখানে কি করস। এভাবে কথা বলার একপর্যায়ে ইপেল ক্ষিপ্ত হয়ে আমার গায়ে আঘাত করে। একই সময় পাশে থাকা শাহীন ও ওবায়দুল্লাহ সঙ্গে সঙ্গেই এলোপাতাড়ি কিলঘুসি মারতে থাকে।
তবে এপিল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাজিদ ও তার বান্ধবী অসামাজিক কার্যকলাপ করছিল। তখন শাহিন ও ওবায়দুল্লাহ তাকে বোঝালে সে তাদের সাথে বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হয় এবং পরে কুমিল্লা ছেলে হওয়ায় সেখানের পাওয়ার দেখাতে থাকে। আমি তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলে সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং একপর্যায়ে আমার কলার ধরে আমার মুখে আঘাত করে। এ সময় আমার বন্ধু শাহিন, ওবায়দুল্লাহ, জিসান ও সোহান তাকে ধরে শান্ত করা চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে সাজিদের সঙ্গে থাকা তার বান্ধবী মায়শা আক্তার মোমি জানান, আমি আর সাজিদ ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। তখন দুজন ভাইয়া ও এক আপু এসে বসেন আমাদের থেকে একটু দূরে। এরপর তারা সাজিদকে ডাকেন এবং ভাইয়া দুজন সাজিদকে ধমকাতে থাকেন। ওরা সাজিদকে ছেড়ে দিলে সাজিদ এসে বলে ওরা আমাদের ব্যাচমেট এবং তাকে র্যাগ দিয়েছে। এ সময় তারা আরও বলেছে তুই আমাদের সপ্তম শিকার।
এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, আজ বিকেল তিনটায় প্রক্টরিয়ার টিম মিটিং করবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু র্যাগিংয়ের একটি বিষয় আছে।
মন্তব্য করুন