দেশে করোনা ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে থাকায় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। একদল শিক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুললেও শিক্ষা বোর্ডগুলো নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা গ্রহণে অনড়। তবে, পরীক্ষাকেন্দ্রে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং আসন বিন্যাসে দূরত্ব বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে আবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৬ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ থাকলেও প্রায় সাড়ে ১২ লাখ পরীক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পরীক্ষার্থী করোনা ও ডেঙ্গুর ঝুঁকি উল্লেখ করে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছেন। যদিও শিক্ষার্থী ও অভিভাবক পরীক্ষা পেছানোর পরিবর্তে কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোর করার ওপর জোর দিচ্ছেন। বিশেষ করে, আসন বিন্যাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন তারা।
তবে, পরীক্ষা পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, আমরা করোনা সংক্রমণ ও ডেঙ্গুর পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। অভিভাবকদের উদ্বেগ যৌক্তিক, কিন্তু সামনে বন্যা মৌসুম আসায় পরীক্ষা পেছানো সম্ভব নয়। তখন পরীক্ষা নেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা কঠোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। পরীক্ষার্থী ও পরিদর্শকসহ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা হবে। সাধারণত এক বেঞ্চে দুজন বা ৩ ফুট দূরত্ব থাকলেও এবার প্রয়োজনে দূরত্ব আরও বাড়ানো হবে, ঠিক করোনাকালের মতো করে আসন বিন্যাস করা হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে।
একই সুরে কথা বলেছেন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী। পরীক্ষার্থীদের জন্য মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে এবং পরীক্ষার কক্ষে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে আসন বণ্টন করা হবে।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক সফিউদ্দিন সেখ জানান, পরীক্ষা নেওয়ার সব প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এবং স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা ঠিক করতে রোববার (আজ) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন। গত বছর (২০২৪ সাল) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন, যা এ বছরের তুলনায় প্রায় ৮২ হাজার বেশি।
মন্তব্য করুন