ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, আওয়ামী নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান সোহাগসহ ১৩ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
রোববার (০৪ মে) শাহবাগ থানায় দায়ের করা এ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা এজাহার পেয়েছি। আইনগত প্রক্রিয়া মেনে আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছি।’ ভিসি ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তখনই ঢাবির জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এসএম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় একটি অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাশেদ খাঁনকেও গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এখনকার মামলায় সেই বিষয়টি তুলে ধরেন রাশেদ।
এজাহারে তিনি অভিযোগ করেছেন, অজ্ঞাতনামা আনুমানিক ৫০০ শতাধিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ঢাকা কলেজসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৮ ও ৯ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, দমনপীড়ন, গুলি বর্ষণ ও উপাচার্যের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরে অংশগ্রহণ করে। সেসময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয় লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর। গুলিতে তার যকৃৎ ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনো শরীরের ভেতরে রয়ে গেছে গুলিটি। ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা গ্রহণ করে। আমি নিজেও ৮ এপ্রিল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট সামনে রাবার বুলেটে আক্রান্ত হই। উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সময় ঢাবি ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান করছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। তাদেরকে রাত দুইটায় শাহবাগ জাদুঘরের সামনে দেখা যায়। মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বানচাল ও বিতর্কিত করতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামধারী আওয়ামী দোসররা, তৎকালীন কেন্দ্রীয় ও ঢাবি ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ঢাবি উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মত ষড়যন্ত্রের সাথে লিপ্ত হয়। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, কোটা সংস্কার আন্দোলন-২০১৮ সালের নেতৃত্বদানকারী ও উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলার ভুক্তভোগী হিসেবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করা হোক।’
মামলায় অজ্ঞানামা পাঁচশতসহ আরও আসামী করা হয়েছে, ঢাবির তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পরবর্তীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন প্রিন্স, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাকিব হাসান সুইম ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান।
মন্তব্য করুন