প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়নের পাশাপাশি সামষ্টিক মূল্যায়নও চালু করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের শিখন অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দময় ও সহজ করে তোলা। এর জন্য শিখন-শেখানো পদ্ধতি, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এবং বিষয়বস্তু নির্বাচনে বিশেষ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বুধবার (১১ জুন) প্রাথমিকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ প্রাথমিক স্তর (পরিমার্জিত ২০২৫)’ প্রকাশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কৌশল, শিখন-শেখানো কার্যাবলি এবং বিষয়বস্তু নির্বাচনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীর শিখন অভিজ্ঞতাকে আনন্দময় ও সহজ করে তোলা।
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, জাতীয় মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও জীবনদর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়ে নতুন দিক উন্মোচনের ফলেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (প্রাথমিক স্তর) পর্যালোচনা করে এটি পরিমার্জন করা হয়েছে।
এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, তাদের কৌতূহলী ও অনুসন্ধিৎসু করে তোলা, প্রশ্ন উত্থাপন ও সমস্যা সমাধানের সুযোগ করে দেওয়া এবং কল্পনা ও উদ্ভাবনী চিন্তনের মাধ্যমে উচ্চতর দক্ষতা অর্জনে ব্রতী করে তুলতে প্রয়োজনীয় সুযোগ রাখা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কৌশলে আনা হয়েছে বড় ধরনের পরিবর্তন। প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। অন্যদিকে, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়নের পাশাপাশি সামষ্টিক মূল্যায়ন পদ্ধতিও চালু করা হয়েছে। এই পরিবর্তনগুলো শিক্ষার্থীর সামগ্রিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় এই পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমটি অনুমোদন লাভ করে। এনসিটিবি আরও জানায়, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, শিক্ষণ বিশেষজ্ঞ, বিষয় বিশেষজ্ঞ, শ্রেণি শিক্ষক এবং অন্যান্য সুধীজনের কাছ থেকে যৌক্তিক পরামর্শ ও নির্দেশনা পেলে তা শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের পরবর্তী ধাপে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। এই যুগান্তকারী পরিবর্তন দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন