এমপিওভুক্তির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে দাবি পূরণ না হলে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা এবং আমরণ অনশনের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদের’ সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে তৃতীয় দিনের মতো লাগাতার কর্মসূচি পালন করেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। কর্মসূচিতে শিক্ষকরা কাফনের কাপড় পরে প্রেস ক্লাব থেকে হাইকোর্ট মোড় হয়ে পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে পুনরায় প্রেসক্লাবে ফিরে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক প্রিন্সিপাল সেলিম মিয়া জানান, গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে টানা ১৭ দিনের আন্দোলনের পর গত ১১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সেখানে তৎকালীন শিক্ষা উপদেষ্টা এবং শিক্ষা সচিব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণকে একটি যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি হিসেবে স্বীকার করেন। তারা মে মাসের মধ্যে এমপিওভুক্তির সব কার্যক্রম শেষ করে পরিপত্র জারি এবং জুলাই মাস থেকে বেতন প্রদানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষকরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলেও প্রায় সাড়ে তিন মাস পার হলেও সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রিন্সিপাল সেলিম মিয়া অভিযোগ করেন, এপ্রিল মাস পর্যন্ত এমপিও সংক্রান্ত কাজে কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেলেও মে মাস থেকে ফাইলটি স্থবির হয়ে পড়েছে।
মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব হলেও দেশে প্রায় ২ হাজারের বেশি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ২০-২৫ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে বিনা বেতনে চাকরি করে সীমাহীন দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এর ফলে শিক্ষার মান নিম্নগামী হচ্ছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। তিনি শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের কাছে পরিস্থিতি খারাপের দিকে না ঠেলে একই দেশে দুই নীতি বন্ধ করে শিক্ষকদের সীমাহীন কষ্টের কথা বিবেচনা করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তকরণের দাবি জানান। অন্যথায়, শিক্ষকরা রাজপথেই তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় করে ছাড়বেন বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. ইমরান বিন সোলাইমান, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ বাকী বিল্লাহ, সমন্বয়ক সুপার মো. ফরহাদ হোসেন বাবুল, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. আফতাবুল আলম, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান, সমন্বয়ক প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর মো. এরশাদুল হক, সমন্বয়ক প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বাবুল, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মামুন, প্রভাষক মো. রায়হান কবির মিঠুসহ বিভিন্ন জেলা সভাপতি ও সম্পাদকসহ শিক্ষক নেতারা।
মন্তব্য করুন