দৈনিক কালবেলায় গত ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ‘তদবির-ভয়ভীতির অভিযোগে উইলস লিটল স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটির প্রতিবাদ জানিয়েছেন উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিত বিভাগের পূর্ণকালীন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এএইচএম সায়েদুজ্জামান।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, “বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে ‘তদবির-ভয়ভীতির অভিযোগে উইলস লিটল স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন’ শিরোনামে একটি সংবাদ আমার দৃষ্টিগোচর হয়। সংবাদটি পড়ে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। কারণ, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, প্রমাণবিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, যা সাংবাদিকতার নীতিমালা ও আইন উভয়েরই পরিপন্থি।”
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদে আমাকে ‘খণ্ডকালীন শিক্ষক’ বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি পূর্ণকালীন শিক্ষক, নিয়মিতভাবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করে থাকি। ‘শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা রেজিস্টারে উপস্থিতি দেখান, ক্লাস চলাকালে মোবাইল ব্যবহার করেন এবং শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত থাকলেও নম্বর প্রদান করেন’ সংবাদের এই বক্তব্য সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মনগড়া। আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কখনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপিত হয়নি। এ ছাড়া সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আমি সহকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করি- এটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া। আমার প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো ঘটনার অস্তিত্ব নেই।
আরও বলা হয়, আমার সম্পাদিত শিক্ষাবার্তা পত্রিকাকে ব্যবহার করে আমি ‘সহকর্মী ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালাই এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করি’ এমন অভিযোগও ভিত্তিহীন ও কল্পনা প্রসূত। ২০১৬ সাল থেকেই শিক্ষাবার্তা শিক্ষা প্রশাসনের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রমাণ-ভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। কেউ একটি টাকাও শিক্ষাবার্তা থেকে দাবি করেছে বা পেয়েছে, দেশের কোথাও কোনো মামলা বা কোনো অভিযোগ দিয়েছেন এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং ও ইভালুয়েশন) অধ্যাপক কাজী কাইয়ুম শিশিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ, রমনা থানায় চাঁদাবাজির মামলা, শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ, মাউশি ডিজির শোকজ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তের আদেশ- এসব ঘটনার সত্য তথ্য-প্রমাণ শিক্ষাবার্তায় প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক শিশির আমার বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মিথ্যা মামলা করেছেন, যা প্রতিহিংসাপরায়ণতার বহিঃপ্রকাশ।
‘সংবাদে আমাকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক নেতা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে এ দাবিও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শিক্ষক এবং শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিক হিসেবে আমার পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবেই আমি সব শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি।’
‘কালবেলায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে। কিন্তু কোথায়, কবে এবং কারা এই মানববন্ধন করেছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। সংবাদে ব্যবহৃত ছবির ব্যক্তিরা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা অভিভাবক কেউই নন। এটি অর্থের বিনিময়ে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশে প্রকাশিত বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
প্রতিবাদলিপির শেষে বলা হয়, ‘আমি জানতে চাই, এই মানববন্ধনে কারা অংশ নিয়েছিলেন, তারা কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত এবং সংবাদে উল্লিখিত অভিযোগের প্রমাণ কোথায়? আমার বক্তব্য না নিয়েই আমার বিরুদ্ধে এমন অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করায় আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। অন্যথায়, আমার সুনাম ও মর্যাদা রক্ষার্থে আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো। কারণ, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার সামাজিক ও পেশাগত মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার যে অপচেষ্টা, তার বিরুদ্ধে প্রতিকার চাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে।’
মন্তব্য করুন