চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে চসিকের একটি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে সাড়ে ৪ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) ২৪ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে এ চার্জশিট দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আগামী ২৮ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মদ সম্প্রতি অধিকতর তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন কুমিল্লার ঝাউতলার বাসিন্দা ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন স্পেশাল অ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তা মো. সরোয়ার আলম, চসিকের সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন এবং এনআরবি ব্যাংকের কুমিল্লা শাখার তৎকালীন শাখা প্রধান ও এভিপি মো. তোফায়েল।
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার থেকে নিমতলা পর্যন্ত পোর্ট কানেকটিং রোড উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের বদলে অভিযুক্তরা ‘আমমোক্তার’ নিযুক্ত করে কাজ হস্তান্তর করেন এবং প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই টাকা উত্তোলন করেন। এতে জনগণের ভোগান্তির পাশাপাশি সরকারের প্রায় ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঠিকাদার মো. আলমের পক্ষে অবৈধভাবে আমমোক্তার হিসেবে নিয়োগ পান মো. জাকির হোসেন। পরে তিনি ভুয়া পরিচয়ে নিজেকে ‘রানা বিল্ডার্স অ্যান্ড সালেহ আহমেদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে উপস্থাপন করে ইউসিবিএল কুমিল্লা শাখা থেকে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ঋণ নেন এবং তা আত্মসাৎ করেন।
ঋণের অর্থ তোলার জন্য তিনি দুটি পৃথক ব্যাংক হিসাব খুলেন। একটি রানা বিল্ডার্স অ্যান্ড সালেহ আহমেদের নামে ও আরেকটি মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের নামে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মামলাটি প্রথমে ২০২২ সালের ১০ মে দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক দায়ের করেন। এক পর্যায়ে আদালত এ মামলার অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিলে সম্প্রতি নতুন করে চার্জশিট জমা দেয় সংস্থাটি।
মন্তব্য করুন