নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সমালোচনা করায় আটক অভিভাবকদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার এবং শিক্ষাক্রম বাতিলসহ চার দাবিতে মানববন্ধন করেছে উদ্বিগ্ন অভিভাবক, শিক্ষক ও নাগরিক সমাজ নামক একটি সংগঠন। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও সর্বজনকথা পত্রিকার সম্পাদক আনু মোহাম্মদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, বাংলা নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত। মানববন্ধন পরিচালনা করেন সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক রাখাল রাহা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার মানের আরও পতন হবে। এ বিষয়ে সচেতন শিক্ষাবিদ, শিক্ষকসহ দেশ-বিদেশের বহু মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন, লিখে আসছিলেন এবং কিছু সংগঠন নানা কর্মসূচিও গ্রহণ করছিলেন। কিন্তু তাদের সেসব কথা ও যুক্তিকে উপেক্ষা করে ২০২৩ সালে এটা বাস্তবায়ন শুরু হলে অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরাও এটার ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বুঝতে পারেন। তারা নানাভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানানোর একপর্যায়ে অভিভাবকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ নিজ সন্তানের স্কুলের সামনে মানববন্ধন করে কারিকুলাম বাতিল বা সংস্কারসহ অন্যান্য দাবিতে একত্রিত হতে থাকেন।
তারা বলেন, অভিভাবকদের এসব কথা ও যুক্তিকে শোনার-বোঝার চেষ্টা করা তো দূরের কথা, উল্টো গত ২৩ নভেম্বর রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক অজ্ঞাত স্থান থেকে মহানগর আইডিয়াল স্কুলের অভিভাবক কাজী সাইফুল হক পনির এবং টাঙ্গাইলের মধুপুরে ‘আলোর ভুবন’ নামের ব্যতিক্রমী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জাহাঙ্গীর কবিরকে সাইবার আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের অভিভাবক তাপসী খান ও স্নাতক শিক্ষার্থী আলামীনকেও মামলার আসামি করা হয়েছে।
নাগরিক সমাজের করা চার দাবির মধ্যে রয়েছে- অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্তে মুক্তি প্রদান করতে হবে এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অভিভাবক সমাজকে হেয় করা, ছোট করা, মামলা প্রদান, গুম, রিমান্ডসহ ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড যারা করেছে তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অভিভাবক ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষের মতবিনিময়ের ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে ওঠা ফেসবুক গ্রুপ ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন’-কে খুলে দিয়ে এর উদ্যোক্তা-অ্যাডমিনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতির সাথে সাংঘর্ষিক নতুন কারিকুলাম বাতিলসহ অভিভাবকরা যে ৮টি দাবি উত্থাপন করেছেন সেগুলোকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করতে হবে।
মন্তব্য করুন