মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ৮ দিন ধরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের আশ্বাসের পরও তারা ক্লাসে ফিরে যাচ্ছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে মাউশি। প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের উপস্থিতি তদারকি করতে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিকে এবং শিক্ষকদের উপস্থিতি তদারকি করতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে ৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়। তবে, চিঠিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের বিষয়টি স্পষ্ট করা না হলেও ক্লাসরুমে অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে ও শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এতেই প্রতীয়মান হয়- নির্দেশনাগুলো কাদের উদ্দেশে দেওয়া।
চিঠিতে বলা হয়, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্য ২০২৩ সাল থেকে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন টিচিং-লার্নিং অ্যাপ্রোচে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নির্ভর করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন যেমন- প্রতিষ্ঠানপ্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবস্থাপনা কমিটি/গভর্নিং বডি, শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সবার কার্যকর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রতিষ্ঠানপ্রধান, শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি/গভর্নিং বডি।
উল্লেখ্য, দৈনন্দিন শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতে শিক্ষকের এবং তা পর্যবেক্ষণে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের নিয়মিত উপস্থিতি অপরিহার্য। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে- কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কোনো কোনো শিক্ষক নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করছেন। পাশাপাশি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিরও কোনোরূপ নজরদারি না থাকায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ ছাড়া এর আগে কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়নি। ফলে এখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাসসহ গভীর নজর দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো- প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি সক্রিয় তদারকি করবে; শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান কার্যকর ভূমিকা নেবেন; কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে গৃহীত বিশেষ ব্যবস্থা কার্যকর রাখা; সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে মিথ্যা ও উসকানিমূলক প্রচারে অংশগ্রহণ না করা; শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
এসব নির্দেশনা পালনে কোনোরূপ ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি, প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন