নদী কিংবা সমুদ্রে প্রায়ই নৌকাডুবির কথা শোনা যায়। সমুদ্রে বিশাল বড় ঢেউসহ প্রচণ্ড ঝড়ের মুখোমুখি নৌকা টিকতে পারে না। তবে জাহাজগুলো অনায়াসে চলাচলা করে। প্রশ্ন হলো এত বড় ঢেউ থেকে কীভাবে সুরক্ষিত থাকে জাহাজগুলো?
মূলত আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার ক্ষমতা বিবেচনা করেই বড় বড় জাহাজগুলো ডিজাইন করা হয়। প্রায় সব জাহাজের নিচের দিকে লম্বা পাখনার মতো একটি কাঠামো থাকে।
জাহাজের তলা এমনভাবে তৈরি করা হয়- যেন স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং জাহাজটিকে ঘূর্ণায়মান হতে বাধা দেয়।
বড় জাহাজে ব্যালেন্স ট্যাংকি থাকে। যা জাহাজের স্থিতিশীলতা জন্য পানি দিয়ে ভরা যায়। সমুদ্রের প্রতিকূল অবস্থা তৈরি হলে এই ট্যাংকিগুলো আংশিকভাবে পানি দিয়ে পূর্ণ করা হয়। এর ফলে জাহাজগুলো ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।
এরপর যখন সমুদ্র শান্ত হয় তখন ব্যালেন্স ট্যাংকির পানি বের করে দেওয়া হয়। আধুনিক জাহাজগুলোতে রয়েছে উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম- যা তাদের ঝড়ের মধ্য দিয়ে নিরাপদে চলাচল করতে সহায়তা করে।
এই সিস্টেমগুলোর মধ্যে রাডার, জিপিএস এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার সরঞ্জামও রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে জাহাজগুলো আগে থেকেই আবহাওয়ার পরিস্থিতির সম্পর্কে তথ্য পেয়ে যায়। এই তথ্যটি জাহাজের ক্রুদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে এবং খারাপ পরিস্থিতি এড়াতে সাহায্য করে।
শুধু তাই নয়, জাহাজের নাবিকদের প্রতিকূল আবহাওয়ার পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। দক্ষ এবং অভিজ্ঞ নাবিকরা জানেন কীভাবে ঢেউ ও ঝড়ের প্রভাব কমাতে জাহাজের গতিপথ ব্যালেন্স ট্যাংকগুলোর মাধ্যমে সমন্বয় করতে হয়।
তাদের এই কৌশলের কারণে বিশাল আকৃতির ঢেউ আর তীব্র ঝড়ের মুখেও বড় বড় জাহাজগুলো টিকে থাকে। অবশ্য কখনো কখনো জাহাজের গতি কিংবা গতিপথ পরিবর্তন করতে হয়।
আরেকটি বিষয় হলো- প্রচণ্ড ঝড়ের সময় বড় জাহাজগুলো গভীর সমুদ্রে নিরাপদে থাকে। এর কারণ, বড় জাহাজের দুটি ইঞ্জিন কার্যকর থাকে।
দুটি ইঞ্জিন চালিয়ে অনেক বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগুলো চলতে পারে। ঝড়ের সময় জাহাজ একটি বিশেষ কৌশলে নির্দিষ্ট গতিতে চালিয়ে ভারসাম্য ঠিক রাখেন নাবিকরা। এতে ঝড়ের সময় বন্দরের চেয়ে গভীর সমুদ্রে জাহাজগুলো নিরাপদে থাকে।
মন্তব্য করুন