

হেঁটে অফিস যাওয়া বা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা অনেকের জন্যই স্বাভাবিক ঘটনা। আবার অনেকের কাছে এটি অসাধ্যকর অবস্থা। একটু সিঁড়ি দিয়ে উঠলেই বুক ধড়ফড় করে? বেশি সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারছেন না? হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে। এটা কি স্বাভাবিক? অনেকে এই হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক মনে করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মোট ৫টি কারণে সিঁড়ি ওঠার সময়ে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, যে কারণে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে হার্টবিট বেড়ে যায়-
১. সমতলে হাঁটার তুলনায় সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে শরীরকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এতে অল্প সময়েই বেশি শক্তি বা এর্নাজি খরচ হয়। এ সময় পা ও ঊরুর পেশিতে বাড়তি অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে। সেই অক্সিজেন সরবরাহ করতে হৃৎপিণ্ডকে স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত রক্ত পাম্প করতে হয়। ফলে হৃৎস্পন্দনের গতি কিছুটা বেড়ে যায়।
২. হার্টের অবস্থা দুর্বল হলে একতলা সিঁড়ি উঠতেই অনেকেই হাঁপিয়ে যায়। তবে নিয়মিত ব্যায়ামকারীদের ক্ষেত্রে সিঁড়ি ওঠা কোনো ব্যাপারই নয়। অন্যদিকে, যারা একেবারেই শরীরচর্চা করেন না, সিঁড়ি ওঠার সময় তাদের হৃৎস্পন্দন দ্রুত বেড়ে যায়। ইউরোপিয়ান জার্নাল অব কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিনের তথ্যমতে, যারা নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন না, তাদের হৃৎস্পন্দন সিঁড়ি ভাঙার সময় স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
৩. স্ট্রেস, ক্যাফেইন বা শরীরে পানির ঘাটতি বা জীবনযাপনের অভ্যাসও হৃৎস্পন্দন বাড়ার জন্য দায়ী হতে পারে। মানসিক চাপ বাড়লে শরীরে অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ বেড়ে যায়, ফলে হার্টবিটও দ্রুত হয়। একইভাবে, দিনে অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা নিকোটিন গ্রহণ করলে হৃদ্যন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। আবার শরীরে পানি কম থাকলেও সিঁড়ি ওঠার সময় হৃৎস্পন্দনের গতি বেড়ে যেতে পারে।
৪. শারীরিক কোনো অসুস্থতা থাকলেও সিঁড়ি ভাঙার সময় হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) বা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে সিঁড়ি ওঠার সময় হার্টবিট স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত হয়ে যায়।
৫. এই সমস্যা এড়াতে নিয়মিত ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে যদি বুক ধড়ফড় করা ছাড়াও মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, বুকে চাপ বা পায়ের কাফ মাসলে টান ধরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তখন সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। কারণ এই ধরনের লক্ষণ হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।
মন্তব্য করুন