হঠাৎ মাঝরাতে বুকের মধ্যে তীব্র ব্যথা অনুভব করছেন, মনে হচ্ছে কেউ যেন বুকের ভেতর পাথর বসিয়ে দিয়েছে। অনেক সময় এই ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে পিঠ, গলা কিংবা চোয়ালের দিকে। বেশিভাগ মানুষই তখন ভাবে, ‘সম্ভবত গ্যাস হয়েছে’, আর তড়িঘড়ি খেয়ে ফেলে প্যানডি জাতীয় কোনো ওষুধ। ব্যথা কমে কি না, সেই আশায় অপেক্ষা করতে থাকে।
অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, এমন ভুল সিদ্ধান্তই হতে পারে প্রাণঘাতী। কারণ এই সময়টিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; প্রথম ১০ থেকে ১৫ মিনিটেই নিতে হবে সঠিক পদক্ষেপ।
সম্প্রতি ভারতের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নারায়ণ ব্যানার্জি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় জানান, বুকের মাঝখানে চাপ ধরা বা ভারী লাগার মতো ব্যথা দেখা দিলে এক মুহূর্ত দেরি না করে নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হবে।
তার ভাষায়, ‘মাঝরাতে হঠাৎ কারও বুকের মাঝখানটা চেপে ধরল। মনে হতে পারে বুকের মধ্যে একটা পাথর বসেছে। ব্যথাটা পিঠের দিকে চলে যাচ্ছে, গলার দিকে বা চোয়ালের দিকে আসছে। সেসময় অনেকেই ভাবে গ্যাস হয়েছে, একটা গ্যাসের ওষুধ খেয়ে দেখে ব্যথা কমে কি না। কিন্তু এতে বিপদ আরও বাড়ে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এমন সময় একদম অপেক্ষা করা যাবে না। কারণ প্রথম ১০-১৫ মিনিটের পদক্ষেপই জীবন বাঁচাতে পারে। তাই নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে উপসর্গ বিস্তারিত জানাতে হবে, যাতে দ্রুত ইসিজি করা যায়।
‘আমরা প্রথমেই দেখি, হার্টে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক আছে কি না। ইসিজি করে যদি দেখা যায় রক্ত চলাচল কম, তখনই ওষুধ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে ক্লট গলানোর ইনজেকশনও দেওয়া হতে পারে,’ বলেন ডা. ব্যানার্জি।
তিনি আরও সতর্ক করেন, বাড়িতে বসে অপেক্ষা করা বা ব্যথা কমার আশায় সময় নষ্ট করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে। কারণ, হার্ট অ্যাটাকের শুরুতে দ্রুত চিকিৎসা নিলে বাঁচার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে, অথচ দেরি হলে জটিলতা বা মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়ে।
চিকিৎসকদের মতে, আজকালকার ব্যস্ত ও অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ ও অনিদ্রা— সব মিলিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়েছে ভয়াবহভাবে। তাই শরীরের যে কোনো অস্বাভাবিক সংকেত, বিশেষ করে বুকের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা হাত-পিঠে চাপ অনুভূত হলে তা কখনোই হালকা করে দেখা যাবে না।
সূত্র : দ্য ওয়াল
মন্তব্য করুন