সকালের নাশতায় ডিম সেদ্ধ, পোচ বা ভাজি অনেকেই খেয়ে থাকেন। ভাতের সঙ্গেও তরকারি হিসেবে খাওয়া হয় ডিম। এ ছাড়া সন্ধ্যার বৈচিত্র্যময় নাশতায় নানাভাবে ডিম যোগ করে স্বাদের বৈচিত্র্য। প্রতিদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ডিম একটি অসাধারণ খাবার। ডিমে রয়েছে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম স্বাস্থ্যকর চর্বি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মোট ৭২ ক্যালরি। ভিটামিন ডি, বি১২, রিবোফ্লাবিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ডিম শক্তি জোগায় এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ডিমের তৈরি বাহারি খাবারের সঙ্গে বাজারে রয়েছে দুই রঙের মুরগির ডিম। ডিমের রং মুরগির জাত ও জিনের ওপর নির্ভর করে। বিবিসি বাংলা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত সাদা পালকের মুরগির ডিম সাদা এবং গাঢ় রঙের পালকের মুরগির ডিম লাল হয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু জাতের মুরগি সাদা হলেও লাল ডিম পাড়ে।
সব ডিমের খোলস শুরুতে সাদা থাকে। ডিম তৈরির শেষ পর্যায়ে মুরগির দেহে থাকা রঞ্জক পদার্থ থেকে রং যোগ হয়। তবে সাদা ডিমের ক্ষেত্রে এই রঞ্জক প্রক্রিয়া ঘটে না।
এবার প্রশ্ন হলো কোন রঙের সঙ্গে পুষ্টি কোনো সর্ম্পক রয়েছে কি না?
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুষ্টিবিদরা জানান, ডিমের রঙের সঙ্গে এর পুষ্টিগুণের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে নিউইয়র্কের গবেষকরা বলছেন, লাল ডিমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সামান্য বেশি থাকে। কিন্তু এই পার্থক্য এতই নগণ্য যে, তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে না।
সাদা বা লাল, ডিমের রঙের সঙ্গে পুষ্টিগুণের তেমন পার্থক্য নেই, তাই যে কোনোটিই নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের তথ্যানুসারে, একটি ৫০ গ্রামের ডিমে রয়েছে ৭২ ক্যালরি এবং ৪.৭৫ গ্রাম ফ্যাট, যা সাদা ও লাল ডিমে প্রায় একই। তবে বাজারে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ, অর্গানিক, নন-জিএমও ফিডে পালিত মুরগির এবং মুক্ত পরিবেশে পালিত দেশি মুরগির ডিমের চাহিদা বেশি।
ডিমের রঙের চেয়ে মুরগির খাদ্য ও পালন পরিবেশ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রাকৃতিকভাবে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া মুরগির ডিমে ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, খনিজ ও ফ্যাট বেশি থাকে। অন্যদিকে, খামারে পালিত মুরগির ডিমে ভিটামিন ও খনিজ কিছুটা কম হলেও প্রোটিন বেশি এবং ফ্যাট কম থাকে।
খামারে ভালো মানের ফিড খাওয়ানো মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ প্রায়ই গৃহপালিত মুরগির ডিমের তুলনায় বেশি হতে পারে। কারণ, খামারের মুরগির নিয়মিত উৎকৃষ্ট ফিড সরবরাহ করা হয়।
মন্তব্য করুন