মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আর ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানি দেওয়া। আর এই পশুর মাংস সংরক্ষণের একটা ঝামেলা তো আছেই। অনেকেই জানেন না কোরবানির পরে কীভাবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করতে হয়। এ ব্যাপারে অসচেতনতার কারণে বাড়তে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি। সংরক্ষণ যদি ঠিকমতো করা না হয় তবে পরবর্তীতে খাওয়াটাও ঝামেলা হয়ে যাবে।
মাংস সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া এবং পচনের হাত থেকে মাংসকে নিরাপদ রাখা। কিছু গুরুত্বপূর্ণ অথচ সহজ নির্দেশনা মেনে চললে খুব সহজেই স্বাস্থ্যকর উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা সম্ভব।
# ফ্রিজে রাখার আগে: ফ্রিজের মধ্যে বাক্সের থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগেই মাংস রাখা উচিত। চর্বিসহ মাংসগুলো আলাদা রাখাই ভালো। ফ্রিজে রাখার আগে, ধোয়ার পর পানি ভালো করে ঝরিয়ে নিন। না হলে অনেক দিন রেখে দিলে মাংস নষ্ট হয়ে যাবে। আর একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন, রান্না করা মাংসের সঙ্গে কাঁচা মাংস রাখা যাবে না। এতে করে কাঁচা মাংসের ব্যাকটেরিয়া রান্না করা মাংসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সংরক্ষণের সময় খাসি এবং গরুর মাংস একই ব্যাগে না রেখে, আলাদা আলাদ ব্যাগে রাখা উচিত। এতে মাংসের গুণগত মান বজায় থাকে।
মনে রাখতে হবে মাংস যত অল্পদিন ফ্রিজে রাখা যায় ততই ভালো। তাজা মাংসের স্বাদ পেতে চাইলে মাংস প্রাপ্তির ১২ ঘণ্টার মধ্যে রান্না করা উচিত। ফ্রিজে গরুর মাংস ৮-১২ মাসের বেশি সংরক্ষণ করা উচিত নয়। ফ্রিজের বিকল্প হিসেবে মাংসে লবণ এবং হলুদ মাখিয়ে বেশকিছু সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
# ইলেকট্রিসিটি না থাকলে: মাংস ফ্রিজে রাখার এক সপ্তাহের মধ্যে বাসায় ইলেকট্রিসিটি না থাকলে খুব একটা ফ্রিজ খুলবেন না। এতে মাংস শক্ত হওয়ার আগেই বাতাস লাগলে বেশি দিন ভালো থাকবে না। রান্না করার ১২ ঘণ্টা পূর্বে মাংস ফ্রিজ থেকে বের করে রাখা উচিত এবং আস্তে আস্তে জমাট বাঁধা মাংস ছাড়ানো উচিত। পানিতে চুবিয়ে মাংস ছাড়ালে স্বাদে তারতম্য হবার সম্ভাবনা থাকে।
# রান্না করা ও কাঁচা মাংস: রান্না করা ও কাঁচা উভয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি একরকম। তবে এগুলোও শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইটে ডিপ ফ্রিজে এক বছর রাখা যাবে। তবে স্বাদ, পুষ্টিগুণ থাকবে না। ফ্রিজে মাংস রাখার ক্ষেত্রে বড় বড় টুকরো করে রাখতে হবে। কারণ, ছোট টুকরোতেও অনেক সময় পানি ও রক্ত জমে থাকে।
# প্যাকেটের গায়ে তারিখ লিখুন: মাংস ফ্রিজে রাখার আগে প্যাকেটের গায়ে তারিখ লিখে রাখুন। এতে মাংসগুলো কত দিন সংরক্ষণ করা হয়েছে সেটা সহজেই বোঝা যাবে।
# তাপমাত্রা: ফ্রিজে মাংস রাখার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ঠিক আছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যে তাপমাত্রায় মাংস সব সময় বরফ থাকবে সেই তাপমাত্রা সেট করে তারপর মাংস রাখতে হবে।
# ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট: ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার নিচে কাঁচা মাংস ৪ থেকে ৬ দিন রাখা যায়। এ ছাড়া জিরো ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার নিচে রাখলে গরুর কাঁচা মাংস ১২ মাস ভালো থাকবে।
মন্তব্য করুন