কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সিরাতুন্নবী (সা.) আলোচনাসভা

আলেম সমাজকে দাওয়াতি মিশনে আপসহীন থাকতে হবে : সেলিম উদ্দিন

রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তন আলোচনাসভায় মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। ছবি : কালবেলা
রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তন আলোচনাসভায় মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। ছবি : কালবেলা

নিজেদেরকে দাঈ ইলাল্লাহ হিসেবে উপস্থাপন করে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করার মাধ্যমে মানুষকে দ্বীন শেখানোর জন্য আলেম সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে এক শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিশ্বনবী (সা.) কে হেদায়াত ও সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছিলেন; অন্যসব বাতিল দ্বীনের ওপর বিজয়ী করার জন্য। তাই আমাদের প্রত্যেকের ওপর দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা চালানো ফরজ তথা অত্যাবশ্যক। এতে কোনো মতবিরোধ করার সুযোগ নেই। রাসূল (সা.) এই মহান দায়িত্ব সফল ও স্বার্থকভাবে পালন করে গেছেন। তিনি দাওয়াতে শাহাদাত আলান্নাস ও শাহাদাতে হক্বের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাবিধ বাধা-প্রতিবন্ধকতা, হামলা ও অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। জিহাদে অবতীর্ণ হয়ে তাঁর দান্দান মোবারক শহীদ হয়েছিল। এর বাইরে দাওয়াতই ছিল তাঁর জীবনের মুখ্য। এই দাওয়াত দিতে গিয়েই তিনি ঘরে-বাইরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাকে হত্যা করার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তাকে কারাবাস এবং শেষ পর্যন্ত হিজরত করতে হয়েছিল। তাই সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে আলেম সমাজকে তাদের দাওয়াতি মিশনে আপসহীন ও অবিচল থাকতে হবে।

তিনি বলেন, রাসূল (সা.) মক্কী জীবনের দীর্ঘ ১৩ বছর লোক গঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তার প্রধান কর্মসূচি ছিল মানুষের চরিত্র গঠন, আত্মগঠন, দাওয়াত সম্প্রসারণ,আকিদা ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন। তাই দ্বীনে হক্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আলেম সমাজকে রাসূল (সা.)- এর আদর্শ ও অনুসৃত নীতি গ্রহণ করে জীবনের সকল কর্মসম্পাদন করতে হবে। তাফসির মাহফিল, ওয়াজ মাহফিল ও সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে মানুষকে দ্বীন শেখানোর প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এক্ষেত্রে বেশি বেশি দাঈ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।

মূলত, দাঈদের মাধ্যমেই সমাজ-রাষ্ট্র সঠিক পথে চলার দিক নির্দেশনা পায়। আর কোরআন-সুন্নাহর আলোকে সমাজের সকল স্তরে জাস্টিস প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালানো আলেম সমাজের অপরিহার্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠায় আলেমদেরকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

প্রধান আলোচকের আলোচনায় অধ্যাপক নূরুল আমীন বলেন, আলেম সমাজ উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং নবী (আ.) গণের উত্তরসূরি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আলেমদেরকে এক অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন। তাই দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে তাদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই বরং রাসূল (সা.) আদর্শ অনুসরণ করে দ্বীনে হক্ব প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাওলানা আ ন ম রশীদ আহমদ মাদানী বলেন, উম্মাহ, দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে আলেম সমাজ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে সকল মতপার্থক্য ভুলে আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তা হলেই ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

অধ্যাপক মাওলানা আ ন ম রশীদ আহমাদ মাদানীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরিনের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল আমীন। বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের উপদেষ্টা ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরিনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন হেলালি।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাজলিসুল মুফাসসিরিনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহসভাপতি মাওলানা আ ন ম মাইনুদ্দিন সিরাজী ও মুফতি মাসুদুর রহমান, বিদেশ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাদিকুর রহমান আজহারী ও মাওলানা আনম আতিকুর রহমান নোমানী প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাচারের সময় ৭২ বস্তা সরকারি চালসহ মাঝি আটক

চোখ দেখেই বোঝা যাবে শরীরে কী রোগ হয়েছে

কেরালায় মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা সংক্রমণে ১৯ জনের মৃত্যু, বাঁচার উপায় কী

গাজায় চালু থাকা কয়েকটি হাসপাতালের কাছে হামলা, নিহত ১৯

আজ রাজধানীতে বিক্ষোভে নামছে জামায়াতসহ ৭ দল, জেনে নিন সময়-স্থান

‘টুপি পরার অপরাধে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হতো’

লিবিয়ায় আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে বাংলাদেশি প্রতিনিধি

যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে চীনের ‘গুয়াম কিলার’ আতঙ্ক

নরসিংদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

ভারতের কারাগারে বাংলাদেশি ৩ কিশোর, উৎকণ্ঠায় পরিবার

১০

দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ, ‘বিপদে’ পড়ছে পৃথিবী?

১১

বিশ্লেষণ / ইসরায়েলের ভয়াবহ তাণ্ডব, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন কি সম্ভব

১২

৪ জেলায় চাকরি দিচ্ছে আরএফএল, পাবেন আবাসন সুবিধা

১৩

‘ফেসবুক মনিটাইজেশনের নেশায় ব্যক্তিত্ব হারাচ্ছে অনেকেই’

১৪

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১৫

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৬ বাংলাদেশি

১৬

যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে ৩ পুলিশ সদস্য নিহত

১৭

প্লাস্টিক পণ্যে ঝুঁকছে মানুষ, ঐতিহ্য হারাচ্ছে বাঁশ-বেতশিল্প

১৮

অবশেষে চালু হচ্ছে আল-নাসিরিয়াহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

১৯

অনেক কাজ করেছি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো দিন হয়নি : আসিফ নজরুল

২০
X