কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হাসপাতালে শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ : চিফ প্রসিকিউটর

চিফ প্রসিকিউটর বক্তব্য
২০২৪ সালের ২৭ জুলাই রাজধানীর নিটোরে আন্দোলনে আহতদের দেখতে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই আন্দোলনের সময় আহতদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখানে গিয়ে তিনি চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আদালতে পূর্বনির্ধারিত বিষয়ে শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন অফিসের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমরা রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালে যখন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম তখন সেখানে চিকিৎসারত আহত রোগী ও তাদের স্বজনরা আমাদের জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে একবার হাসপাতাল পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে বলেছিলেন, ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’। অর্থাৎ কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আহতদের কোনো চিকিৎসা না দিতে এবং কাউকে এখান থেকে বাইরে না যেতে দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, রোগীদের পাশাপাশি এই নির্দেশাবলীর কথা সেখানকার ডাক্তাররাও আমাদেরকে জানিয়েছেন। এর তথ্য প্রমাণাদি আমাদের হাতে আছে, আমরা সেটাই আজ আদালতকে জানিয়েছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আমাদের যেসকল সন্তানরা শহীদ হয়েছেন, তাদের মৃতদেহ প্রশাসনের নির্দেশে সুরতহাল করতে দেওয়া হয়নি, কাউকে কাউকে ডেথ সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়নি। এমনকি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার পর যারা সেখানেই শহীদ হয়েছেন তাদের ডেথ সার্টিফিকেটে গুলিতে মারা গেছে- এই কথাটিও লিখতে দেওয়া হয়নি। শ্বাসকষ্ট কিংবা জ্বরে মারা গেছে এ ধরনের কথা লিখতে বাধ্য করা হয়েছে। আন্দোলনে শহীদের লাশ দাফন করতে যাচ্ছে জানতে পারলে রাস্তায় পুলিশ তাদের পরিবারের ওপর হামলা-আক্রমণ করেছে।

তিনি বলেন, আদালত আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে, শহীদদের সুরতহাল প্রতিবেদন বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য এবং কেন সেগুলো নেই। আমরা আদালতকে জানিয়েছি যে, সেই মুহূর্তে মানবতাবিরোধী অপরাধের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, দ্রুত শহীদদের লাশ দাফন করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাই এ কারণে তাদের কোনো পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেওয়া হয়নি।

তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়, বরং তা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ। এটিই প্রমাণ করে কী ধরনের নিষ্ঠুরতার সঙ্গে জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডগুলো চালানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্মমতার প্রমাণসমূহ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই ও ফরেনসিক করার পর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী মামলার প্রমাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আদালতের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কমিক বইয়ে ‘ভয়ংকর পরিণতির ভবিষ্যদ্বাণী’, জাপানজুড়ে আতঙ্ক

দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে বিএনপির বিকল্প নেই: আব্দুস সালাম

ইসরায়েলের পাঁচ সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান

‘আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের ভোটের বাক্স হবে একটাই’

লঙ্কানদের বিপক্ষে ফাইফারের পর যা বললেন তানভীর

হবিগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই নেতা আটক

আঘাত, লাল কার্ড, বিদায়—সব পেছনে ফেলে সেমিতে পিএসজি

৬ জুলাই / বিক্ষোভে উত্তাল দেশ, ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা

নারী দলের জন্য গভীর রাতে অভিনব সংবর্ধনার আয়োজন

পুরোনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি, খেলার নিয়ম বদলাতে এসেছি: নাহিদ ইসলাম

১০

ক্যান্সার আক্রান্ত জিসানের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন তারেক রহমান

১১

সিরিয়ার নতুন জাতীয় প্রতীক ‘সোনালী ঈগল’, অর্থ কী ও কেন?

১২

‘বিআইটি মডেল’ বাস্তবায়ন দাবিতে উত্তাল ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

১৩

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক উৎসবমুখর নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় বিএনপি : প্রিন্স

১৪

তপশিল ঘোষণার পর জোট বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে : ফারুক

১৫

কুমিল্লায় ৩ খুনের নেতৃত্বে ছিলেন চেয়ারম্যান-মেম্বার

১৬

চালের দাম নিয়ে সুখবর দিলেন খাদ্য উপদেষ্টা

১৭

আন্তর্জাতিক ইসলামি সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সভা

১৮

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন : ধর্ম উপদেষ্টা

১৯

বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি না করার আহ্বান সাকির

২০
X