বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতি বছর বিশ্বে রোডক্র্যাশে ১১ লাখ ৯০ হাজার সড়ক ব্যবহারকারী নিহত হয়।
রোববার (২২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন সকলের জন্য প্রয়োজন' শীর্ষক সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান।
সড়ক নিরাপত্তা আইনের আলোচ্য বিষয়ে উপস্থাপনায় শারমিন রহমান আরও জানান, বিশ্বে রোডক্র্যাশে মৃত্যুর ৯২ শতাংশ নিম্ন ও মধ্যেম আয়ের দেশে এবং মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি হচ্ছে পথচারী, সাইকেল ও মোটরসাইকেল আরোহী। ওয়ার্ল্ড হেলথ র্যাঙ্কিং অনুসারে, সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনাকবলিত ১৮৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৬তম।
সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও তার সঠিক প্রয়োগ ব্যতীত দেশে রোডক্র্যাশ কমানো বা রোধ করা সম্ভব নয়। সঠিক আইন ও তার প্রয়োগের ফলে সড়ক দুর্ঘটনা, যা বর্তমানে একটি বড় সমস্যা, তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা যেতে পারে। তাই সবার জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’।
সভায় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক (ক্রাইম) শুভ্র দেবের সঞ্চালনায় নিরাপদ সড়ক জোরদারকরণে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ)’র সাধারণ সম্পাদক ও ইউএনবির বিশেষ প্রতিনিধি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক জামিউল আহ্ছান শিপু এবং দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার নিজস্ব প্রতিনিধি (ক্রাইম) ইমন রহমান।
এসময় আলোচকরা বলেন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এবং এর বিধিমালা মূলত সড়ক পরিবহন খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত কিন্তু সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এগুলো যথেষ্ট নয়। সড়ক অবকাঠামো ও যানবাহনের নিরাপত্তা, সড়ক ব্যবহারকারীর (বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারী) নিরাপত্তা , দুর্ঘটনার পরবর্তী ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এতে যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। সুতরাং, সড়কে সব ধরনের সুরক্ষা সম্পর্কিত সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার জন্য পৃথক ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপনে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ও সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত পরিবহন সংক্রান্ত আইন। তাই সড়ককে অধিকতর নিরাপদ করতে ও রোডক্র্যাশ কমাতে এই আইন ও বিধিমালা যথেষ্ট নয়। এ জন্যই জাতিসংঘ প্রস্তাবিত বর্ণিত ৫টি বিষয়কে (বহুমুখী যানবাহন ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা; নিরাপদ যানবাহন; নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো; নিরাপদ সড়ক ব্যবহার; রোডক্র্যাশ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ করণ) বিবেচনায় নিয়ে একটি সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও এর বাস্তবায়ন অতীব জরুরি।
মন্তব্য করুন