আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে পাইলট প্রকল্পের আওতায় স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ। এ বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকার রাজি হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে থমকে আছে পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন। ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় গতি ফেরাতে আগামীকাল সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা-নেপিডো মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র।
জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন নিশ্চিতের লক্ষ্যে দুদেশের মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকটি হতে যাচ্ছে। এতে অংশ নিতে গত শনিবার নেপিডো গেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাইনুল কবিরের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শুরু থেকেই সরকার জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিদেশীয় উদ্যোগসহ আন্তর্জাতিক সব ফোরামেই ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় চলছে বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া। তবে শুরু থেকেই সরকার স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অঙ্গিকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এবারের বৈঠকে নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারকে যেন রোহিঙ্গারা আস্থায় নিতে পারে সে ব্যাপারে জোর দিবে বাংলাদেশ। এই বৈঠকের পর মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে কক্সবাজার আসবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক এমন তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গাদের তালিকা করেছে সরকার। এদের মধ্য থেকে প্রত্যাবাসন শুরু হলে প্রথম ব্যাচে হাজার খানেক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ একই পরিবার এবং এলাকার রোহিঙ্গাদের পাঠানোর পক্ষে। তবে প্রথম ব্যাচে কতজনকে নেওয়া হবে সেটি মিয়ানমারের ওপর নির্ভর করছে।
আরও জানা গেছে, চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তরিক মিয়ানমার। তবে এর আগেও প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। তাই মহাপরিচালকদের বৈঠকেই যে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত হবে বিষয়টি এমন নয়। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু করতে এ ধরনের বৈঠক চলমান থাকবে।
মন্তব্য করুন