আওয়ামী সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির হোতা মোতাজ্জরুল ইসলাম মিঠুকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া জানান, মিঠুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা রয়েছে। দুদকের অনুরোধে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজই মিঠুকে দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, টেন্ডার জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন। সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।
ডিবি জানায়, মিঠু দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির অন্যতম মূলহোতা হিসেবে পরিচিত।
এদিকে স্বাস্থ্যখাতে সিন্ডিকেট গড়ে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে ৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইস ও টেকনোক্রেট নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম (মিঠু) কৃষিজমি ক্রয়, জমি লিজ, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার ও বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবের জমা অর্থ, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী মিলিয়ে তার আরও ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ২৩৮ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সব মিলিয়ে মিঠুর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৮ টাকা। এ ছাড়া মিঠুর নামে পারিবারিক ব্যয় হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৭১ কোটি ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৪ টাকা। অর্থাৎ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের সঙ্গে পারিবারিক ব্যয় মিলিয়ে তার মোট সম্পদ ও ব্যয়ের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ ৪৬ হাজার ১৭২ টাকা।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসা, বাড়িভাড়া, কৃষিজ আয়, বেতন-ভাতা, ফার্মের অংশ, ব্যাংক সুদ, নিরাপত্তা জামানতের সুদ এবং বৈদেশিক রেমিট্যান্স থেকে মোতাজ্জেরুল ইসলামের বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় শনাক্ত করা গেছে ৭১ কোটি ৪৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩৫ টাকা।
মন্তব্য করুন