

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের সমুদ্র উপকূলের ওপর দিয়ে ভারতের স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানান তিনি।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাত ৩টার সময় কলকাতা শহর থেকে প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু রাজ্যের সমুদ্র উপকূলে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে ঘণ্টায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় প্রায় ১৩ কিলোমিটার বেগে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালের মধ্যে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের সমুদ্র উপকূলের ওপর দিয়ে ভারতের স্থলভাগে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। স্থলভাগে আঘাত করার পরে দুর্বল হয়ে লঘুচাপ আকারে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ফলে আজ সোমবার থেকে বাংলাদেশ আকাশে মেঘের উপস্থিতি লক্ষ করা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ওপরে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ এর প্রভাবে আজ বাংলাদেশর উত্তর দিকের ৩টি বিভাগের (রংপুর, ময়মনসিংহ, ও সিলেট) বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সর্ব উত্তরের জেলাগুলোর ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, আসাম রাজ্যের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এরপর বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৯ ও ৩০ অক্টোবর) দেশের ৮ টি বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, আসাম, মেঘালয়, ও ত্রিপুরা রাজ্যের উপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা অপেক্ষাকৃত বেশি সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে।
এ ছাড়া জেলেদের জন্য আবহাওয়া পূর্বাভাসে তিনি বলেন, সোমবার থেকে ভারতের পশ্চিম রাজ্য ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকার সমুদ্র উত্তাল অবস্থা বিরাজ করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া সব জেলাকে আজকেই উপকূলে ফেরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার ও বুধবার (২৮ ও ২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশের সব উপকূলীয় এলাকার সমুদ্রে উত্তাল অবস্থা অবস্থা বিরাজ করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ এর প্রভাবে বাংলাদেশের ওপরে সম্ভাব্য বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করার কোনো সম্ভাবনা এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ এর প্রভাবে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু করে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিম দিকের ৫টি বিভাগের (খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ও সিলেট) জেলাগুলোর ওপরে ২০ থেকে ৬০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের অবশিষ্ট ৩টি বিভাগের (ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম) জেলাগুলোর ওপরে ১০ থেকে ৩০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন