

আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট হস্তান্তর বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন সোমবার (১০ নভেম্বর) গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অধিশাখা–১-এর উপসচিব ড. মো. নুরুল আমিন স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে হস্তান্তর প্রক্রিয়া বিষয়ে নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন সংস্থাগুলোর উন্নয়নকৃত আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট হস্তান্তর–পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় সেবা সহজীকরণ, ইজারাগ্রহীতাদের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমানো এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে সাত দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, এতদিন আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের দলিল সম্পাদনের জন্য উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান বা হস্তান্তর (বিক্রয় বা বণ্টন) সংক্রান্ত দলিল ও ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। তবে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে এসব ক্ষেত্রে আর কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না।
তবে প্লট বিভাজন, একত্রীকরণ বা মাস্টারপ্ল্যানে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে আগের নিয়ম অনুযায়ী অনুমতি নিতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দলিল হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের জন্য ২ শতাংশ এবং প্লটের জন্য ৩ শতাংশ ফি দলিলগ্রহীতাকে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হবে। এই ফি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অর্থনৈতিক কোড অনুযায়ী নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) হিসেবে আদায় করা হবে।
এতে বলা হয়, হস্তান্তরের পর দলিলের এক কপি এবং নামজারি-সংক্রান্ত সব নথি ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নথি জমা না দিলে দৈনিক ৫০ টাকা হারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে। জমা দেওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানকে মালিকানা হালনাগাদ সম্পন্ন করতে হবে। এই নথিপত্র রেজিস্টার্ড ডাকের পাশাপাশি ই-মেইল বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দলিলগ্রহীতার কাছে পাঠাতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ইজারা দলিলের মেয়াদ শেষে (৯৯ বছর পর) তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হবে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো দলিল ফি দিতে হবে না। তবে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া প্লট বিভাজন, একত্রীকরণ বা মাস্টারপ্ল্যানে পরিবর্তন আনা যাবে না।
আবাসিক সম্পত্তি ব্যতীত প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্যিক বা শিল্প প্লট, ফ্ল্যাট ও জায়গা হস্তান্তর ও নামজারির ক্ষেত্রে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি গ্রহণের নিয়ম বহাল থাকবে। এ ছাড়া যেসব প্লট বা ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে, পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত, অথবা ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মধ্যে বিশেষ বরাদ্দপ্রাপ্ত, সেসব ক্ষেত্রেও আগের মতো অনুমোদন নিতে হবে।
এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো কোনো আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট অনুমোদন ছাড়াই হস্তান্তর করা যাবে, তার একটি তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা হবে। প্রকাশিত তালিকায় কোনো ভুল বা ত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করবে।
মন্তব্য করুন