

মানব পাচার সংক্রান্ত মামলায় ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক বিচার প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশের বিচারিক প্রক্রিয়া আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত কার্যালয় (ইউএনওডিসি)-এর সহযোগিতায় আজ ঢাকায় মানব পাচার মামলায় কার্যকর ফৌজদারি বিচারিক প্রক্রিয়া বিষয়ক বেঞ্চবুক-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে।
সরকারের এ উদ্যোগটি বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা প্রদান এবং মানব পাচার সংক্রান্ত মামলায় ন্যায়সংগত, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও ট্রমা-সংবেদনশীল বিচার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা)-এর আর্থিক সহায়তায় প্রণীত এই বেঞ্চবুকটি বিচারকদের মানব পাচার সম্পর্কিত মামলার কার্যক্রমে সঠিক ও ধারাবাহিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে এবং একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত রাখবে।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের নেতৃত্বে গঠিত অ্যাডভাইজরি এক্সপার্ট কমিটির পরামর্শ এবং সংশ্লিষ্ট বিচার খাতের অংশীদারদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় প্রকাশনাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, ‘মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের দক্ষতা শক্তিশালী করাই এই বেঞ্চবুকের মূল লক্ষ্য। এটি জাতীয় আইন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যায়সংগত, কার্যকর এবং ট্রমা-সংবেদনশীল বিচারপ্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দপ্তরের সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মিখাল ক্রেজা বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই উদ্যোগকে সমর্থন করতে পেরে গর্বিত। এটি মানব পাচার মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিচারিক প্রতিক্রিয়া আরও শক্তিশালী করবে এবং ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা ও মৌলিক অধিকার রক্ষায় আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করবে। এই বেঞ্চবুক সারা দেশে ন্যায়সংগত, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক বিচার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে, যা আইনের শাসনকে আরও দৃঢ় করবে।’
কোইকা বাংলাদেশ-এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সুজিন কং বলেন, ‘কোইকা বাংলাদেশের বিচার খাতকে মানব পাচার মোকাবিলায় আরও সক্ষম করে তোলার প্রচেষ্টায় অংশ হতে পেরে গর্বিত। ভুক্তভোগীরা যেন মর্যাদা ও সুরক্ষা পান তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই বেঞ্চবুক একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ, যা বিচার প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা ও ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করবে এবং অপরাধীরা যথাযথভাবে জবাবদিহির মুখোমুখি হবে।’
আইওএম বাংলাদেশের অফিসার-ইন-চার্জ ক্যাথরিন নর্থিং এবং ইউএনওডিসি সদর দপ্তরের মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান বিভাগে ডেপুটি প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জি আই লিসহ অন্যান্য বক্তাও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন