সিদ্ধিরগঞ্জে ‘স্বপ্ন বিলাস’ নামে দশতলা ভবনের পিলার ধসে পড়ে নিভে গেল আব্দুল্লাহর (৭) জীবন প্রদীপ। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন ভবনটির কেয়ারটেকার ও মালিক পক্ষ।
আব্দুল্লাহ ওই এলাকার স্কুলশিক্ষক মো. শরীফের ছেলে। সে স্থানীয় হাজি সামসুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। তার শ্রেণি রোল নম্বর এক। খবর পেয়ে রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পারিবারের সদস্যরা জানায়, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে খাটের ওপর শুয়ে বসে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে ছোলা বুট খাচ্ছিল আব্দুল্লাহ। হঠাৎ টিনের চাল ভেঙে ইটের তৈরি একটি পিলার পড়ে শিশু আব্দুল্লার ওপর। এতে পিলারচাপায় ঘটনাস্থলেই সে প্রাণ হারায়।
স্থানীয়রা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্কুলের ১৮ জন শিক্ষক মিলে ‘স্বপ্ন বিলাস’ নামক একটি সমিতি গঠন করেন। সমিতির মাধ্যমে ১০তলা ভবনটি নির্মাণ করছেন। কোনো রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ভবনটির নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। ভবনটির দক্ষিণ পাশে স্কুলশিক্ষক শরীফের টিনশেড বাড়ি। ভবন নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। কিন্তু সমিতির লোকজন তাতে পাত্তা দেননি।
নিহতের বাবা শরীফ মাস্টার বলেন, আমার বাড়িটি নেওয়ার জন্য ওই সমিতির লোকজন অনেক চেষ্টা করেছে। এক কোটি টাকা খরচ করে হলেও আমার বাড়িটি নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলায় ঠিকাদার আহম্মদ উল্লাহ আমাকে হত্যার ভয় দেখায়। একই এলাকায় টি-টাওয়ার নামক ১০তলা ভবনে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ওই ঠিকাদার বর্তমানে জেলে রয়েছেন।
নিহত শিশুর মা রুনা অভিযোগ করে বলেন, জমি বিক্রি না করায় পরিকল্পিতভাবে স্বপ্ন বিলাস সমিতির লোকজন আমাদের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হত্যা করেছে তারা।
মন্তব্য করুন