উন্নয়নখাতের এক প্রকল্পের অধীনে খনন করা ১২টি নৌপথের অর্ধেকই ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় নাব্যতার অভাবে ওইসব নৌপথ যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করতে পারছে না।
৫০৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং বিভাগ।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাত্রী ও পণ্যবাহী জলযানসমূহের নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১৬ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ১২টি নৌপথের নাব্যতা উন্নয়ন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নকাল ছিল অক্টোবর ২০১১ থেকে জুন ২০১৫।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নকালে প্রয়োজনীয় খনন করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে নিয়মিত পলি অপসারণের মাধ্যমে নাব্যতা বজায় রাখা হয়নি। ফলে অর্ধৈক নৌপথ পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে।
জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত দুই বছর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এছাড়া নৌ পরিবহন বিশেষজ্ঞ, নৌযান মালিক ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে।
তবে বিআইডব্লিউটিএ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এসসিআরএফ জানায়, প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হলেও সংস্থাটির র ড্রেজিং বিভাগ দীর্ঘ দুই মাসেও চিঠির জবাব দেয়নি।
‘১২ নৌপথ খনন’ প্রকল্পের আওতায় থাকা নৌপথগুলো হলো- ঢাকা-তালতলা-ডহুরী-জাজিরা-মাদারীপুর, লাহারহাট-ভেদুরিয়া, সাহেবেরহাট-টুঙ্গীবাড়ী-লাহারহাট, সদরঘাট-বিরুলিয়া, পাটুরিয়া-বাঘাবাড়ী, ডেমরা-ঘোড়াশাল-পলাশ, ঢাকা-রামচর-মাদারীপুর, ঢাকা-শরীয়তপুর, চাঁদপুর-নন্দীর বাজার-শিকারপুর-হুলারহাট, হুলারহাট-চরচাপিল-গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-দাউদকান্দি এবং ঢাকা-সুরেশ্বর-আঙ্গারিয়া-মাদারীপুর।
তবে এগুলোর মধ্যে সদরঘাট-বিরুলিয়া, ডেমরা-ঘোড়াশাল-পলাশ, হুলারহাট-চরচাপিল-গোপালগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ-দাউদকান্দি নৌপথ কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া নাব্যতা সংকটের কারণে আরও কয়েকটি নৌপথের শুরু থেকে শেষপর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতির কারণে সঠিকভাবে নদী খনন ও নৌপথ সংরক্ষণ হচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।