কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভাঙ্গায় সমাবেশ শেষে গোপালগঞ্জের পথে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরোনো ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরোনো ছবি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সমাবেশ শেষে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ২৯ মিনিটে বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে রওনা দেন। এ সময় তার বোন শেখ রেহানা ও তার সফরসঙ্গীরা সঙ্গে ছিলেন।

এদিন বিকেল ৩টার দিকে ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

ফরিদপুর সবসময় অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুর পুরনো শহর, আমরা সরকারে এসে ফরিদপুরের উন্নয়ন করেছি, ফরিদপুরের মেডিকেল কলেজকে সম্প্রসারিত করে সেবা বাড়িয়েছি। আমি জানি, ফরিদপুরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। ইনশাআল্লাহ, আবার সরকারে এলে ফরিদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ।

এর আগে পদ্মা সেতু হয়ে রেল উদ্বোধনের জন্য বেলা ১১টায় তিনি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচনের কথা বলে আর আমাদের ক্ষমতা থেকে হটানোর কথা বলে, তারা কখনও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। ভোট চুরির মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় এসেছিল।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, কেউ ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে রেল যোগাযোগ আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

এ সময় কৃষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। আপনারা প্রতিটি জমিতে চাষাবাদ করুন।

তিনি আরও বলেন, ‘সারের দাম আমরা কমিয়েছি। ভর্তুকি দিয়েছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। কারও কোনো সমস্যা হলে আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের পাশে দাঁড়ান। এভাবে আমরা মানুষের উন্নয়ন করছি।’

দেশবাসীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা এ দেশের মানুষের উন্নয়নে মনোযোগী ছিল না। একমাত্র আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসার পর এ দেশের মানুষের উন্নয়ন করেছে। কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথা নিচু করে নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সবাই তার আদর্শে মাথা উঁচু করে বাঁচব সবাই।

এ দেশে কোনো হতদরিদ্র থাকবে না। জাতির পিতা ভূমিহীনদের নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। শেষ করে যেতে পারেননি। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করে চলেছি বলে জানান তিনি।

ইউনূসকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এক ভদ্রলোক, বিশ্নখ্যাতিও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সামান্য একটা ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে পারবে না বয়সের কারণে- সেটা বলার জন্য পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করেছিলেন। তখন বলেছিলাম- নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু গড়ব। জাতির পিতা বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা করে দেখিয়েছি।’

ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর সেকশনের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। ঢাকা-যশোর সেকশনে নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। ২০টি স্টেশনের মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে তিনটি। প্রকল্প অনুযায়ী, শত কোচ সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা যেতে বাসযাত্রীদের খরচ পড়ে ২৫০ টাকা আর এসিতে ৫০০ টাকার মতো। রেল মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। এ রেলপথের জন্য ভাড়া নির্ধারণে রেলওয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। এ অনুযায়ী পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে ভাঙ্গা যেতে যাত্রীদের আন্তঃনগর ট্রেনে (নন-এসি) চেয়ার কোচে ভাড়া গুনতে হতে পারে ৩৫৫ টাকা। এসি চেয়ারে ৬৭৯ টাকা। সব মিলিয়ে বাসের চেয়ে ট্রেনে গুনতে হবে ১০৫-১৭৯ টাকা পর্যন্ত বেশি। ভাড়া প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে প্রতিটি গন্তব্যের বাস্তব দূরত্বের সঙ্গে পদ্মা সেতু ও গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের জন্য বাড়তি দূরত্ব যোগ করেছে রেলওয়ের কমিটি। রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরা হয়েছে। একে রেলওয়ে পন্টেজ চার্জের জন্য বাড়তি দূরত্ব বলা হচ্ছে। আর গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার প্রকৃত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে আদায় করতে চায় ৩৫৩ কিলোমিটার দূরত্বের ভাড়া।

পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে যে পাঁচ ট্রেন: প্রাথমিকভাবে শুরুতে পদ্মা সেতু দিয়ে পাঁচটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পাঁচটি ট্রেনের মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটের দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চিত্রা, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমান রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় চলাচল করবে। ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করবে। প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেন মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এদিকে খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ধর্ম যার যার নিরাপত্তা সবার : আমীর খসরু

স্বাস্থ্যকর ঘুমের ১২ অভ্যাস

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল ইতালি সরকার

পিআরসহ ৫ দফা মেনে নেওয়ার আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের

অবতরণের সময় মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

জানা গেল কবে দেশে ফিরবেন শহিদুল আলম

পচা চাল কিনে বাধ্যতামূলক অবসরে খাদ্য কর্মকর্তা

ভুল সময়ে ওজন মাপলে জানবেন ভুল তথ্য

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি সাইকেলিস্টদের

কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

১০

ভোট নিয়ে জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি

১১

ফুটবল খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

১২

প্রাথমিকে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

১৩

জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে গণভোট দিতে হবে : গোলাম পরওয়ার

১৪

স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গড়তে ৩১ দফার বিকল্প নেই : ড্যানী

১৫

ভারতের ১৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

১৬

অতিরিক্ত মদ্যপানে আরও চারজনের মৃত্যু

১৭

‘গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে’

১৮

অযোধ্যায় ভয়ংকর বিস্ফোরণ, অভিযান চলছে

১৯

শরীর যথেষ্ট ফাইবার পাচ্ছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

২০
X