দখলদার ইসরায়েলের নির্মম আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী বিপ্লবী জনতার পক্ষে ‘সংহতি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল’ করার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
আগামী শনিবার (১৪ অক্টোবর) বাদ জোহর, বাইতুল মুকাররম উত্তর গেইটে এই ‘সংহতি সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল সফল করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিবের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কমিটির একটি দল রাজধানী ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
এর আগে বুধবার সকালে জামিয়াতুল মানহাল উত্তরায় হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে ‘সংহতি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল’ বাস্তবায়ন করার জন্য মাওলানা জুনাইদ আল হাবিবকে আহ্বায়ক এবং মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারীকে সদস্য সচিব করে একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকাল ৮টায় থেকে ওই বাস্তবায়ন কমিটি রাজধানী ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করে ১৪ তারিখের প্রোগ্রামের দাওয়াত পৌঁছে দেন। তারা সকাল ৮টায় জামিয়া মোহাম্মাদিয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুরে, সকাল ১১টায় জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম খিলগাঁওয়ে, দুপুর টায় যাত্রাবাড়ীর মাদানী মনজিলে, বিকাল ৪টায় জামিয়া ইসলামিয়া বাবুস সালাম উত্তরায় এবং রাত ৮টায় সাভার দারুল উলুম মাদ্রাসায় দাওয়াতি কার্যক্রম শেষ করেন।
এসময় আরো ছিলেন সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, প্রচার সম্পাদক মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফয়সাল আহমাদ ও সহকারী অর্থ সম্পাদক মুফতি কামাল উদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন জোনে দাওয়াতি প্রোগ্রামেগুলোয় আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের উপদেষ্টা আল্লামা আবুল কালাম, নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, নায়েবে আমির মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মাওলানা আলী আকবর, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতি আমিনুল ইসলাম কাসেমীসহ কেন্দ্রীয় প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সংহতি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল এর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব বিবৃতিতে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমরা প্রোগ্রাম সফল ও সার্থক করার জন্য রাজধানী ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী যেই সব স্থানে সফর করেছি, সে সব স্থানের সর্বত্র আলেম-ওলামা, তালিবুল ইলম, ও ইসলাম প্রিয় তৌহিদি জনতার মাঝে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছি।
এ ছাড়া আজ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা কমিটির উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে দখলদার ইসরায়েলের নির্মম আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী বিপ্লবী জনতার পক্ষে ‘সংহতি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় পঞ্চাশ হাজার আলেম উলামা, তৌহিদি জনতা ও বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবী মানুষের সমাগম ঘটেছিল। এতে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মুবারকুল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান।
তিনি মিছিল পূর্ব বক্তব্যে বলেন, আজ বিশ্ব মানবতার শত্রু ইসরাইল গাজা উপত্যকায় পানি ও বিদ্যুতের লাইন কেটে দিয়ে গাজাকে চতুর্দিক থেকে অবরুদ্ধ করে স্বাধীনতাকামী নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্মমভাবে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই দখলদার বাহিনী আন্তর্জাতিক আইনকে মোটেও তোয়াক্কা না করে হামলা চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। তাদের বর্বর হামলা মানবতার বিরোধী জঘন্যতম অপরাধ। তারা সুস্পষ্টভাবে হিউম্যান রাইটসের আইন লঙ্ঘন করছে। কাল বিলম্ব না করে এখনই তাদের বর্বরোচিত হামলা বন্ধ করতে হবে।
এ ছাড়া আগামী শনিবার হেফাজতের উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠাতব্য সংহতি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল সফল করার জন্য দেশবাসী ও মুসলমানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হেফাজতের সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মাওলানা তানভীরুল হক, মাওলানা বুরহান উদ্দীন কাসেমী, মাওলানা এনামুল হাসান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন