সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য অন্যরকম দিন ছিল আজ বুধবার। তারা বিনা ভাড়ায় দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত দ্রুত গতির ট্রেন মেট্রো রেলে ঘুরেছে। এখানেই শেষ নেয় বিআরটিসির ছাদ খোলা বাসে চড়ে শিশু-কিশোরদের আনন্দ যেন আর ধরে না। বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে দিনভর নিজেদের মতো করে উপভোগ করেছে শিশুরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে ব্যতিক্রমী এই অনুষ্টানের আয়োজন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। অল্প বয়সে বাবা-মাকে হারিয়ে পুলিশের সহায়তায় প্রথমে আজিমপুর শিশু মনি নিবাসে ঠাঁই হয় তার। এরপর তেজগাঁওয়ের সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) এসে উঠেছিল মিম আক্তার। সে এখন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আপনজন ছাড়াই তার বেড়ে ওঠা। মিমের মতো ৬০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে ছাদখোলা বাসে চড়ানো, মেট্রোরেলে ভ্রমণ করানো হয়। কেক কাটাসহ দিনভর তাদের জন্য ছিল বিনোদনের নানা আয়োজন। তারা বাদ্য বাজনা বাজিয়ে বাসে ও ট্রেনে নেচে গেয়ে দিনটি উপভোগ করে। সবাইকে দেয়া হয় বিশেষ ধরণের পোশাক।
সকাল ৯টায় শিশুদের নিয়ে ছাদ খোলা বাস আসে আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে। এরপর আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেলে চড়ে শিশুরা উত্তরা চলে যায়। উত্তরার দিয়া বাড়িতে অবস্থিত ঢাকা মেট্রোরেলের প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’- শীর্ষক শেখ রাসেল দিবসের কেক কাটা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন আজ। দুই বছর থেকে শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসাবে পালিত হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিশেষ ব্যবস্থায় মেট্রোরেল ভ্রমণের ব্যবস্থা করেছি। কেক কাটাসহ নানা আয়োজন করেছি তাদের জন্য।
আজকের দিনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা অনেক আনন্দ করছে , এটাই আমাদের পাওয়া। মেট্রোরেলে ভ্রমণ দারুণ উপভোগ করে শিশুরা। তাদের মধ্যে একজন রাকিবা আক্তার ঋতু (১৩)। বাবা নেই, মা পোশাক শ্রমিক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা শিশুটির জমি জায়গা বসত ভিটা বলতে কিছুই নেই।
রাকিবা বলেন, মেট্রোরেলে চড়ে আমাদের খুব ভালো লাগছে। এই প্রথম মেট্রোরেলে চড়লাম। তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) ১৬৫ জন নিবাসি আছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত ১১৭২ জনকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেক কাটার অনুষ্ঠানে জেবা নামের এক শিশু বলেন, আজকে আমাদের আরেক ছোট্ট ভাই শেখ রাসেলের জন্মদিন, তাই আজকে আমরা অনেক খুশি মেট্রোরেল উঠতে পেরে। কেক কাটা এবং আলোচনা সভা শেষে শিশুরা আবারও মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও স্টেশনে ফিরে আসে। তারপর বিআরটিসি বাসে করে শিশুদের স্ব-স্ব ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন