ঢাকা মহানগরীর প্রথম পূর্ব-পশ্চিম এমআরটি লাইন-৫ নর্দার্ন রুটের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৪ নভেম্বর) এমআরটি লাইন-৬ এর মতিঝিল স্টেশনে বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে এ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তিনি।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় পাতাল মেট্রোরেল হবে এমআরটি লাইন-৫। এই প্রকল্পে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে রাজধানীর ভাটারা পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পাতাল এবং ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার উড়ালসহ মোট ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল লাইন তৈরি হবে। এর মাঝে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য মোট ১৪টি স্টেশন (৯টি পাতাল ও ৫টি উড়াল) থাকবে।
এমআরটি লাইন-৫ এর রুট অ্যালাইনমেন্ট হলো—হেমায়েতপুর-বলিয়ারপুর-বিলামালিয়া-আমিন বাজার ও গাবতলী। সেখান থেকে দারুস সালাম-মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪ ও কচুক্ষেত হয়ে যাবে বনানী। এরপর গুলশান-২ ও নতুনবাজার হয়ে লাইনটি যাবে ভাটারায়। এর মধ্যে হেমায়েতপুর থেকে আমিন বাজার ও ভাটারা এই অংশে মেট্রোরেলের উড়াল পথ হবে। গাবতলী থেকে নতুন বাজার অংশে পাতাল মেট্রোরেল হবে।
প্রকল্পটির কাজ ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পেও ঋণসহায়তা দিচ্ছে জাইকা।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনের পর দুপুর আড়াইটায় আগারগাঁও রেলস্টেশন থেকে সফরসঙ্গীদের নিয়ে মতিঝিলের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী। তার সঙ্গে ছিলেন ২০০ আমন্ত্রিত অতিথি।
উদ্বোধনের পর দিন রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে এটি সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রথমে তিনটি স্টেশন চালুর মাধ্যমে এ অংশের মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। স্টেশনগুলো হলো- মতিঝিল, বাংলাদেশ সচিবালয় ও ফার্মগেট।
মতিঝিল অংশে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্য দিয়ে মতিঝিল-উত্তরার যাত্রীদের দীর্ঘদিনের যানজটের দুর্ভোগ অবসান হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা।
ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে দ্রুতগামী, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, সময়-সাশ্রয়ী, বিদ্যুৎচালিত, দূরনিয়ন্ত্রিত ও পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার প্রবর্তন হিসেবে ২০১৬ সালের ২৬ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়।
দ্রুতগামী এই যোগাযোগ ব্যবস্থার (এমআরটি লাইন-৬) প্রাক্কলিত ব্যয় (দ্বিতীয় সংশোধিত) হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) সহজ শর্তে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণ দিয়েছে।
মন্তব্য করুন