নতুন মন্ত্রিসভায় ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ও সুযোগসন্ধানীদের স্থান না দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন আত্মদায়বদ্ধ সামাজিক সংগঠন প্রজন্মের চেতনা। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান।
মানববন্ধনে বলা হয়, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে শিল্পস্বার্থ, ব্যবসায়িক স্বার্থ উদ্ধারে সিদ্ধহস্ত। তারপরও যদি তারা সরাসরি ক্ষমতা হাতে পান তাহলে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের এবং নিকটজনদের স্বার্থকেই বেশি প্রাধন্য দিবে।
প্রজন্মের চেতনার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম রাশেদ রাব্বি বলেন, নির্বাচনী হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৭ জন নির্বাচিত হয়েছেন যাদের মূল পেশা ব্যবসা। মাত্র ২৪ জন আইনজীবি, কৃষিজীবি দুজন এবং একজন রয়েছেন শিক্ষাবিদ। রাজনীতিবিদের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। এ পরিস্থিতিতে নতুন যে মন্ত্রিসভা গঠন হবে সেখানে যেন ব্যবসায়ীদের স্থান না দেওয়া হয়।
ব্যবসায়ীরা মন্ত্রিসভায় স্থান পেলে তারা মূলত নিজেদের ব্যবসাকে প্রাধান্য দেয় জানিয়ে বলা হয়, নতুন মন্ত্রিসভায় ব্যবসায়ীদের স্থান না দিয়ে যারা গণমানুষের ভেতর থেকে উঠে এসেছেন, যারা পর্যায়ক্রমে রাজনীতিবিদ হিসেবে উঠে এসেছেন, যারা মানুষের কথা বলবেন, মানুষের দুঃখ-কষ্ট বুঝবেন তাদের যেন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়।
বক্তারা বলেন, আমাদের সংবিধানেও বিধান রয়েছে, যারা শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত তারা মন্ত্রী হতে পারবেন না। সংবিধান প্রণেতারা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের মন্ত্রীর পদ থেকে খুব সঙ্গত কারণেই দূরে রাখতে চেয়েছেন। কারণ, যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, সরকার পরিচালনা করেন কিংবা রাজনীতি করেন তাদের জীবন, জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং অঙ্গীকার ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের।
প্রজন্মের চেতনার কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম নবী হোসেন বলেন, আমাদের দেশে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ও সুযোগসন্ধানীদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। বিগত সরকারগুলোর আমলে মন্ত্রিপরিষদে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোক যেমন ছিল তেমনি ছিল সুযোগসন্ধানীসহ ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরাও। তাদের লুটপাট ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা এখনো অনেকেরই স্মৃতিতে আছে। সেই সময়গুলোতে যারা মন্ত্রিত্ব করার সুযোগ পেয়েছিলেন তাদের সহায়-সম্পদের হিসাব নিলেই ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মাসুদ আলম, ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মো. ছালেক-উর-রহমান (সুমন) ও যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন সরকার আলীম।
মন্তব্য করুন