কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দেশের বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাপার উদ্বেগ

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি দেশের বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক নুরমোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির। বাপার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ওই বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি ‘বায়ুদূষণের দেশ হিসেবে শীর্ষে বাংলাদেশ, নগর হিসেবে দ্বিতীয় ঢাকা’ এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন গত ১৯ মার্চ প্রথম আলোসহ দেশের বিভিন্ন দৈনিক ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৩’–এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক আইকিউএয়ারের সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। বায়ুদূষণের অন্যতম উপাদান পিএম ২.৫ বা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপাদান ধরেই এই বায়ুর মান নির্ণয় করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। ১৩৪টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার নজরদারি স্টেশন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আইকিউএয়ার প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

সেখানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের চেয়ে অন্তত ১৬ গুণ বেশি।

বাপা মনে করে, বিশ্বের দরবারে বাঙালি জাতির জন্য এটি অত্যন্ত অপমান ও লজ্জাজনক ঘটনা। সরকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণের কারণে দেশে শ্বাকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা ও এ রোগে মৃত্যু ভয়াবহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বায়ু দূষণের কারণগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক ও আবহাওয়াজনিত কারণ, নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি, আইনের দুর্বলতা, আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা, ভৌগোলিক কারণ এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যতম। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ থেকে ৩০ শতাংশ, ইটভাটা ও শিল্প কারখানা থেকে ২৯ শতাংশ, যানবাহন থেকে ১৫ শতাংশ আন্তঃদেশীয় বায়ুদূষণ থেকে ৯.৫%, গৃহস্থালী ও বা রান্নার চুলার কাজের থেকে ৮.৫% এবং বর্জ্য পোড়ানো থেকে ৮% বায়ুদূষণ ঘটে। বায়ুদূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন একটি অন্যটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। জীবাশ্ম জ্বালানির দহন ও শিল্পকারখানায় নির্গত ধোঁয়া প্রচুর পরিমাণে ব্ল্যাক কার্বন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন ও ওজন নির্গত করে, যা গ্রিনহাউস গ্যাস নামেও পরিচিত। এসব দূষকের মধ্যে ব্ল্যাক কার্বন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেনকে শর্ট লাইভ ক্লাইমেট পল্যুশন (SLCPs) বা স্বল্প আয়ুর জলবায়ু দূষক বলা হয়। এই গ্যাস এবং দূষকগুলো একদিকে যেমন বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, তেমনি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী।

পর পর গত কয়েক বছর ধরে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যত কোনো পদক্ষে গ্রহণ না করায় আমরা তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। দেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বায়ুদূষণ রোধে বাপার সুপারিশ ও দাবিসমূহ- নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ দ্রুত প্রণয়ন করতে হবে। নির্মাণকাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখতে হবে ও নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নিতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে দূষিত শহরগুলোতে প্রতি দিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন বাড়াতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালু ও কার্যকর করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাইকেল ক্লার্ক থেকে যুবরাজ সিং: ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়েছেন যে ৮ ক্রিকেটার

ফিট থাকতে সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছেন? সঠিক নিয়ম না মানলে বড় বিপদ

গাজাঘেঁষা ইসরায়েলি শহরে ড্রোন হামলা

হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ফুল শাপলা

বিধ্বস্ত সেই যুদ্ধবিমানের পাইলট ফোনে কথা বলেন ১ ঘণ্টা, তদন্তে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য

মানুষের কাছে আমি মীর জাফর হয়ে গেছি : রাহী

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আজীবন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারেন

কর্ণফুলী টানেলে দুর্নীতি, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পাকিস্তানের বন্যায় কেন এত প্রাণহানি ঘটছে?

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব মো. আব্দুর রহমান

১০

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় খুবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১১

তামিল অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

১২

তরুণদের মাঝে মহানবীর (সা.) সুন্নাহ জাগাতে বাহরাইন সরকারের বিশেষ উদ্যোগ

১৩

পুকুরে আছড়ে পড়ল হেলিকপ্টার

১৪

পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে : অধ্যাপক মজিবুর রহমান

১৫

ট্রাম্প প্রশাসনের ‘উগ্র দক্ষিণপন্থি’ নতুন যুক্তরাষ্ট্র

১৬

এক ছাতার নিচে ৩ পরাশক্তি, কোন দিকে যাচ্ছে বিশ্ব?

১৭

হামলা-মামলা নির্যাতনেও হাসিনার কাছে মাথানত করিনি : এ্যানি

১৮

তিন মাস পর বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি নিয়ে মুখ খুলল আরসিবি

১৯

আগারগাঁওয়ে ‘ব্লকেড’, সিইসির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক বাতিল

২০
X