মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪, ০৮:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ইসলামী আন্দোলনের সেমিনার

‘দেশ ও ইসলাম নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। ছবি : সংগৃহীত
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। ছবি : সংগৃহীত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ইসলাম নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলাম মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে উৎসাহ দেয়। কিন্তু মানুষ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘নতুন পাঠ্যপুস্তকে বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম (শায়খে চরমোনাই) প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, শিক্ষায় আলো। শিক্ষা থেকে যদি বঞ্চিত রাখা যায় তবে জাতিকে ধ্বংস করা যায়। ছেলে-মেয়েদের অবাধ চলাফেরা দেখানো হয়েছে পাঠ্যপুস্তকগুলোতে। মা বাবার দ্বীনি পরিবেশ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক থেকে কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য শিক্ষা বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে ঢোল-তবলা দেওয়া হয়েছে। এটা শিল্পকলার কাজ, জাতীয় কারিকুলামে এটা হতে পারে না। মুসলিম সন্তানদের একত্রে নাচতে গাইতে, ছেলে-মেয়েদের বন্ধুদের হাত ধরে চলতে শেখানো হচ্ছে।

জাতীয় শিক্ষক ফেরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. নাছির উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আ খ ম ইউনুস, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মগজ বিকৃত কিছু বুদ্ধিজীবী শিক্ষা থেকে ইসলামকে দূরে রাখতে অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সংকীর্ণতা দূর করে লোভকে পরিহার করে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবে ভবিষ্যতে প্রজন্ম ঈমান ইসলাম নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

আশরাফ আলী আকন বলেন, বাংলাদেশে আগ্রাসন বহুমুখী। এ আগ্রাসন থেকে মুক্ত হতে না পারলে আমাদের কপালে দুর্ভোগ আছে।

অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ইসলাম কাউকে গোলাম তৈরি করতে শেখায় না, বরং মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে উৎসাহ দেয়। আমাদের একটি নতুন শিক্ষা কমিশন গঠনের ঘোষণা সময়ের দাবি।

অধ্যাপক আ খ ম ইউনুস বলেন, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে হাবুডুবু খেয়ে যারা বেড়ে উঠেছে তারাই এই কারিকুলাম তৈরি করেছে। বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলিয়া মাদ্রাসা। আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা সংরক্ষণে দলমত নির্বিশেষে উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মো. নাছির উদ্দীন খান বলেন, আমরা মনে করি সকলের মেধা ও প্রতিভা কখনোই এক হবে না। কিন্তু সরকার, অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের লক্ষ্য ও প্রতিভার ভিন্নতা বিবেচনা না করে বাধ্যতামূলকভাবে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের একমুখী মডেলে তৈরি করতে চান। শিক্ষা কারিকুলাম-২০২১ এ সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো প্রায় প্রতিটি বিষয়ই সবচেয়ে কম মেধাবী ছাত্রের কথা বিবেচনা করে পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হয়েছে যা বিজ্ঞান বইগুলোতে চোখ রাখলেই এর বাস্তবতা লক্ষ্য করা যাবে। এতে করে আমাদের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের মেধার বিকাশ করতে পারবে না। ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। জাতি হিসেবে আমরা আরও পিছিয়ে পড়ব।

এ সময় অনুষ্ঠানে দেশের স্বার্থে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেধা বিকাশের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করা হয়। সেগুলো হচ্ছে-

- বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম-২০২১ বাতিল করা এবং যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে অভিজ্ঞ, দেশপ্রেমিক এবং দ্বীনদার শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ত করা।

- পাঠ্যপুস্তকে সকল বিষয় হতে বিতর্কিত ও ইসলামী আক্বীদাবিরোধী প্রবন্ধসমূহ বাদ দেওয়া।

- স্কুল ও মাদ্রাসার সকল পাঠ্যপুস্তকে বিজাতীয় সংস্কৃতি, অনৈসলামিক শব্দ এবং অশ্লীল চিত্রমুক্ত রাখা।

- আলিয়া মাদ্রাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বতন্ত্র কারিকুলাম প্রণয়ন করা।

- শিক্ষকদের স্বতন্ত্র উচ্চতর বেতন কাঠামো এবং শিক্ষক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

বাবার খোঁজে ভারতে যাচ্ছেন এমপি আনারের মেয়ে

ফোর্বসের তালিকায় স্থান পাওয়া ৯ তরুণকে ছাত্রলীগের শুভেচ্ছা

মোবাইল কিনে না দেওয়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে বসে লাখ টাকার অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবসা

র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু, ক্যাম্প কমান্ডারসহ প্রত্যাহার ৪

চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৮২ শতাংশ : বিবিএস

ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল শিশুর

জাল স্বাক্ষরে ওষুধ বিতরণের অভিযোগ

ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আরবদের মুনাফেকি ও সুপার হিরোদের অবদান

১০

নোয়াখালীতে ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ

১১

নিপুনের পেছনে বড় কোনো শক্তি আছে : ডিপজল

১২

ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে চবিতে সাইক্লিস্টের র‍্যালি

১৩

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আইআইইউসি প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাৎ

১৪

আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ

১৫

রাইসির মরদেহ কোথায়, জানাজার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত?

১৬

রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ৫০ বছরের পুরোনো

১৭

মসজিদে ঢুকে ইমামকে যুবদল নেতার বেধড়ক মারধর

১৮

রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পরও বেঁচে ছিলেন এক আরোহী

১৯

ছেলের আত্মহত্যায় মায়ের বিষপান

২০
X