রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৮ ও ১৯ জুলাই বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হামলা ও পুলিশের গুলিবর্ষণে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করে উল্টো বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, বিএনপি ও সরকারবিরোধী অন্য দল এবং জোটগুলোর কর্মসূচিতে বিপুল লোকসমাগম ঘটছে। এর মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে দেশের জনগণ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
নেতারা বলেন, অবিলম্বে বর্তমান অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং সংসদ বিলুপ্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ও বুধবার (১৯ জুলাই) এক আন্দোলনের প্রথম ধাপের পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপিসহ কয়েকটি দল ও জোট। সেই মোতাবেক সারা দেশে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি বের করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা লক্ষ্মীপুর, বগুড়া, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, ঢাকা, ফেনীসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হায়েনার মতো আক্রমণ করেছে। ধারালো অস্ত্র নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদের সঙ্গে যোগ দেয় আওয়ামী চেতনায় লালিত পুলিশ বাহিনীর বেশকিছু সদস্য ও কর্মকর্তা। তাদের যোগসাজোশে বর্বরোচিত হামলা ও সশস্ত্র আক্রমণে লক্ষ্মীপুরে কৃষক দলের নেতা সজীব নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া প্রায় দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে জখম ও আহত করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির পাঁচ হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। যা নিন্দনীয় এবং ন্যক্কারজনক।
ইউট্যাবের দুই শীর্ষ নেতা বলেন, সন্ত্রাসী হামলায় বিরোধী দলের একের পর এক নেতাকর্মী নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরব ভূমিকা লক্ষ করা যাচ্ছে। অথচ রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচিতে হামলা-মামলা ও বাধা দেওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি দলের হয়ে পক্ষপাতমূলক ও অপেশাদারমূলক আচরণ করছে।
তারা বলেন, যখন বিশ্বের গণতন্ত্রকামী প্রায় সব দেশ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক করার ব্যাপারে জোর দিচ্ছে তখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম আরও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মনে হচ্ছে বিরোধী দল দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে অগণতান্ত্রিক পথেই হাঁটছে আওয়ামী লীগ সরকার। অথচ একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে কার্যকর জাতীয় নির্বাচন করতে সরকারের উচিত এগিয়ে আসা। কিন্তু তারা যেন তাদের সাজানো নীল নকশা বাস্তবায়নের দিকে ক্রমেই ধাবিত হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, আমরা শিক্ষক সমাজের পক্ষে সরকারকে বলব বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে বাধা না দিয়ে গণতন্ত্রের পথে হাঁটুন। অবিলম্বে পদত্যাগ করে দেশে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
মন্তব্য করুন