কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:০১ পিএম
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:২৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
গার্মেন্টসে ভাঙচুর

ভাতঘরে আগুন দিলে পেটও পোড়ে

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

‘গার্মেন্টসে ভাঙচুর : নিজ প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে কেন শ্রমিক’- এ বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।

বাকী বিল্লাহ : শোষণের মাত্রা যদি লিমিট ক্রস করে তখন শোষকের প্রতি ন্যূনতম বিবেক বা দয়া কাজ করে না। শ্রমিকরা দিনের পর দিন এসব প্রতিষ্ঠানে শোষণের শিকার হয়ে আসছে। এখন যখন ন্যায্যতার প্রশ্ন দেখা দিল তখনই শোষক দ্বারা সেসব শ্রমিকদের রক্তে রঞ্জিত হলো রাজপথ। এ সব বিবেচনায় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটা খুবই স্বাভাবিক। তবে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ন্যূনতম ন্যায় ও আন্তরিক সম্পর্ক থাকলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। একই সঙ্গে সরকারেরও উচিত ছিল এক শ্রেণির পক্ষ না নিয়ে উভয়ের কথা শুনে যৌক্তিক সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া। কিন্তু ঘটনা ঘটল উল্টো। ঠিক আগুনে ঘি ঢালার মতো অবস্থা।

মুহাম্মাদ উল্লাহ : ভাঙচুরের কারণ, গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাতে শ্রমিকদের ঠকায়। আরও বড় কারণ হতে পারে বহিরাগত প্রভাশালী বিভিন্ন সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। এ সব কারণে তারা নিজের কর্মক্ষেত্রকেও আপন মনে করতে পারছে না।

মুজাক্কির হোসাইন : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক ব্যবস্থার অবনতির ফলে শ্রমিকরা নিজ প্রতিষ্ঠান ভাঙছে।

মো. ফারুক খান : মালিক না বাঁচলে শ্রমিক ও বাঁচতে কষ্ট হবে। একটি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাওয়া। শ্রমিকদের এ বিষয়টা মাথায় রেখে অধিকার আদায়ের আন্দলোন করতে হবে। এমন কোনো আন্দোলন করা উচিত হবে না; যাতে করে মালিক পক্ষ বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ করে দেয়। এতে করে উভয়পক্ষ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তার প্রতি খেয়াল রেখে মালিক পক্ষ, বিজিএমইএ ও সরকারকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। যাতে করে শ্রমিকরা অন্তত খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে পারে।

এসকে আবাদুল ইসলাম : শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রশাসন যখন বাধা দেয় অথবা বল প্রয়োগ করে আন্দোলনকে নিভৃত করতে চায় তখন পোশাক শ্রমিকরা উত্তেজনার বশীভূত হয়ে ভাঙচুরের মতো সহিংস পথ বেছে নেয়। আমাদের মনে রাখা উচিত সহিংস আন্দোলন মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। শান্তিপূর্ণ যৌক্তিক আন্দোলনে বল প্রয়োগ না করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান রইল।

জসিম উদ্দিন : তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে এসব হচ্ছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে পূঁজি করে অপরাজনীতি চলবে।

মো. ফারুক খান : আমার জানা মতে শ্রমিক কখনো তার নিজ প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করতে পারে না। এটা মালিকপক্ষের কোনো না কোনো চাল। আমাদের একটা বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন যে, শ্রমিক কখনো মালিকের শরীর স্পর্শ করতে পারে না। কিন্তু মালিক শ্রমিকের শরীর স্পর্শ করতে কোনো দ্বিধাবোধ করে না। আমাদের দেশে যদি মালিক শ্রমিক ঐক্য হয়ে চলতে পারত তা হলে আজকে এ রকম সহিংসতা হতো না।

এসবি হৃদয় : যে প্রতিষ্ঠান তাদের রক্ত-ঘামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানেই তারা লাঞ্ছিত-বঞ্চিত। তাই রাগে-ক্ষোভে ভাঙচুর করেছে। যে প্রতিষ্ঠিন তাদের প্রতি দয়া দেখায় না তাদের শোষণ করে তারা সেই প্রতিষ্ঠানকে দয়া দেখাবে।

মো. কামরুল ইসলাম বাপ্পী : নিজের প্রাপ্য আদায় করার জন্য সব কিছু ঠিক। শ্রমিক কেন তার মজুরি আদায়ের জন্য গার্মেন্টস ভাঙতে পারবে না।

রাকিব সিকদার : ২০ টাকার আলু যদি ৭০ টাকা হতে পারে তাহলে শ্রমিকদের বেতন কেন ঠিক মতো বৃদ্ধি করা হয় না।

শিমু তালুকদার : শ্রমিকরা দেখছে তাদের শ্রম-ঘামে গার্মেন্টস মালিকরা অর্থনৈতিকভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠছে। অথচ শ্রমিকরা অর্থ কষ্টে দিনযাপন করছে। এই অবস্থায় শ্রমিকদের ভেতর ক্ষোভ জমে ওঠা স্বাভাবিক। সেই ক্ষোভ থেকেই তারা তাদের নিজস্ব কর্মস্থলে হামলা চালাতে দ্বিধা করছে না।

শাহিন আলম : পাঁচ বছর আগে ডলারের দাম এবং বর্তমান ডলারের দাম হিসাব করে দেখুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন বর্তমান নিম্নতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা করা হয়েছে সে মূল্য হিসেবে বর্তমান কত ডলার আসে, গত পাঁচ বছরে কত ডলার ছিল। কত ডলার বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রমিকদের বেতনভাতা নিয়ে যে আন্দোলন হচ্ছে সেটা আদৌ সঠিক হচ্ছে কি না তা আপনাদের বিবেচ্য বিষয়।

মো. স্বাধীন মালিক : শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি আদায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছে। সেই আন্দোলনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ও পুলিশ মিলে আন্দোলন পণ্ড করার কথা বলে সহিংসতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে কাজ করে স্বাধীনতা বা ন্যায্য মজুরি পায় না, তাই নিজ প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে শ্রমিকরা।

জুয়েল আহমেদ : হুজুগে বাঙালি বলে কথা। এদের দ্বারা সব সম্ভব। বিএনপির পক্ষপাতিত্ব করা শ্রমিকরাই ভাঙচুর করেছে।

শহিদুল ইসলাম : তাদের যথার্থ মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। যে মজুরি দেওয়া হচ্ছে সেটা মালিকদের এক দিনের খাবারের বিলের সমান। গার্মেন্টস মালিকদের উচিত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা। পেটে না হলে কি পিঠে সয়!

মো. সাহাবুদ্দিন : আমার মতে নিজের ভাতঘরে আগুন দেওয়া মানে উপস থাকা। নিজের কর্মপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর না করে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা উচিত।

খায়রুল আমিন পলাশ : হয়তবা শ্রমিকরা নিজ প্রতিষ্ঠানেই অবহেলিত ও বঞ্চিত। তাই সুযোগ পেলে প্রতিশোধ নেয়। তবে ভাঙচুর কোনো সমাধান নয়। শ্রমিক নেতারা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে পারে। তাতেও কাজ না হলে শ্রমিক ধর্মঘট পালন করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে আপনার প্রতিষ্ঠান টিকে থাকলে আপনিও টিকে থাকবেন।

হোসাইন মোহাম্মদ মেহেদী : গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের বেতন বাড়ানোর অধিকার আদায়ের জন্য মিছিল করেছে। সেখানে তাদের মিছিলকে বাধা দেওয়ার ফলে তাদের রাগ-ক্ষোভ সামাল দিতে পারেনি। ফলে তাদের নিজেদের কর্মস্থলে এবং যানবাহন ভাঙচুর করেছে। তাদের শান্তিপূর্ণ অধিকার আদায়ে বাধা না দিলে এ রকম সমস্যা হতো না।

নুর আহমাদ সিদ্দিকী : আমার মনে হয় না শ্রমিকরা তাদের নিজের প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করবে। এই ভাঙচুরের পেছনে অনেকেই দাবি করছে সরকারের হাত আছে। শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের আন্দোলনে পুলিশ করছে গুলি। কেন এত বৈষম্য? শ্রমিকরা কি মানুষ না? তাদেরও পরিবার-পরিজন আছে। পুলিশ বা শ্রমিক মরুক সেটা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি চাই না। আমি চাই শ্রমিকরা তাদের শ্রমের যথাযথ মর্যাদা পাক এবং পুলিশও জনগণের প্রতি সদয় আচরণ করুক।

মোফাজিলুল ইসলাম : শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রম দিয়ে গার্মেন্টস টিকে আছে। গার্মেন্টস মালিকরা দামি গাড়িতে চলে আর শ্রমিকরা পরিবারের ন্যূনতম চাহিদাটা মেটাতে পারে না। প্রতিষ্ঠানের প্রতি মায়া কীভাবে জন্ম নেবে!

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইরানের যে প্রযুক্তির কাছে নাকানিচুবানি খাচ্ছে ইসরায়েল

ইরানের হামলায় ইসরায়েলি তেল পরিশোধনাগার বিধ্বস্ত

সামরিক অভিযানে গাজায় ৪৩১ ইসরায়েলি সেনা নিহত 

এরদোয়ানের সঙ্গে পেজেশকিয়ানের ফোনালাপ

চীনের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা

ইসরায়েলের চতুর্থ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি ইরানের

ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে হামলা শুরু করেছে ইরান

ইরানে অস্ত্র ভরা বিমান পাঠিয়েছে চীন

‘আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ হবে’

ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় হামলার প্রস্তুতি ইরানের

১০

আবাসিক হোটেলে ‘সাংবাদিক’ সেজে অভিযান চালানো সেই হান্নান আটক

১১

সাভারে দেশীয় অস্ত্রসহ ৫ ছিনতাইকারী আটক

১২

সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

১৩

দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ / স্থানীয় ও বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো চায়ের নিলাম বর্জন

১৪

তেল আবিবের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলল ইরান

১৫

এবার ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

১৬

প্রবাসীদের স্বপ্নগুলো কী অধরাই থেকে যাবে?

১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত শতাধিক

১৮

কাঠমান্ডু ডিক্লারেশন / মাতৃভাষায় সাংবাদিকতা বিস্তারে ভূমিকা রাখতে সার্ক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান

১৯

একের পর এক টেলিকম কর্মী অপহরণ, সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা

২০
X