আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সম্প্রীতি বজায় রাখতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ও স্থাপনার নিরাপত্তা এবং তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগে অবস্থিত নিমতলা মন্দির প্রাঙ্গণে এ অঞ্চলে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সম্প্রীতি রক্ষায় হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট ও কলাবাগান থানায় অবস্থিত সব মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় স্থাপনাসমূহে ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন একাদশ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শেখ রবিউল আলম।
নিমতলা মন্দির প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভায় শেখ রবিউল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের দুঃশাসনের সময় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের শান্তিতে একটি দিনও থাকতে দেয়নি। গায়েবি আর মিথ্যা মামলা দিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। অত্যাচার ও নির্যাতনে অনেকেই বিদেশে চলে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি বাসা-বাড়িতেও থাকতে দেওয়া হয়নি। প্রতিটি নেতাকর্মীর বাসাবাড়িতে গভীর রাতে পুলিশ এসে হানা দিয়ে ভাঙচুর ও পরিবারের সদস্যদের হরহামেশাই গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেত।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরে এসেছেন। এখন সংখ্যালঘুদের মন্দির, বিহার, প্যাগোডা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের নেতাকর্মীদের। কাউকে আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট করতে দেওয়া হবে না।
তিনি অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বিএনপির সময় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি নিরাপদে থাকে আর সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থেকেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৬ থেকে ১৭ বছর ধরে দেশে গুম, খুন-সন্ত্রাসসহ এত বেশি অপকর্ম করেছে যে শেষ পর্যন্ত জনরোষে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। দলটির নেতাকর্মীরা এখন ধর্মীয় উসকানি দিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বয়কট করেছে। দেশে আওয়ামী লীগের এই মুহূর্তে রাজনীতি করার ন্যূনতম সুযোগ নেই। এই ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ খুন, গুম, হত্যা ও যত অপকর্ম করেছে- সেগুলোর আগে বিচার হতে হবে, তারপর জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা (আ.লীগ) রাজনীতিতে আসতে পারবে কিনা।
বিএনপির এ নেতা বলেন, কিছুসংখ্যক দুস্কৃতকারী যারা রাজনৈতিক দলের নয়, যারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়- তারা যতই চেষ্টা করুক, বাংলাদেশের দীর্ঘকালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য ইচ্ছা করলেই নষ্ট করতে পারবে না। এবারও শতচেষ্টা করে তারা এই সৌহার্দ্য এবং ঐক্য বিনষ্ট করতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমাদের (বিএনপি) অঙ্গীকার আছে, আমরা বাংলাদেশে একটা রেইনবো স্টেট নির্মাণ করতে চাই, সব ধর্ম-গোত্র-বর্ণ নির্বিশেষে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সে কথাই বিশ্বাস করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হাজারীবাগ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ মজিবুর রহমান মজু, মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সদস্য আবুল খায়ের লিটন, হাজারীবাগ বিএনপি নেতা আরজু আহমেদসহ থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন