সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন দমন করার রাস্তা বের করতেই পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।
রোববার (৩০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঞ্চের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। এ সময় দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এক দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের ধারায় ৩১ জুলাই ঢাকায় এবং ১ আগস্ট বিভাগীয় শহরসহ জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় বেলা ১১টায় পুরানা পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
সাইফুল হক বলেন, এক দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ২৯ জুলাই ঢাকার পাঁচটি প্রবেশমুখে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। সরকারি দল একইভাবে পাল্টা কর্মসূচি দেয়। এটাকে অজুহাত করে পুলিশ প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা দিলে সরকারি দল তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। কিন্তু বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশি ছত্রছায়ায় বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর প্রকাশ্যেই সন্ত্রাসী কায়দায় উপর্যুপরি হামলা-আক্রমণ চালায়। পুলিশ এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি, বরং বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিরোধী দলসমূহের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ ও সরকারি দলের তাণ্ডবে আহত হয় কয়েকশ নেতাকর্মী।
গণতন্ত্র মঞ্চের এই সমন্বয়ক বলেন, গাবতলীতে গণতন্ত্র মঞ্চের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে মঞ্চের শীর্ষ নেতা ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. ইউসুফ সেলিম, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রাজ্জাক সজীবকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার রাতে শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও আবদুর রাজ্জাক সজীব মুক্তি পেলেও ডা. ইউসুফ সেলিম এখনো মুক্তি পাননি। আজ তাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় জামিন না দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া শনিবার আটক বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখনো হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করার পাঁয়তারা চলছে।
সাইফুল হক বলেন, শনিবার পুলিশের উপস্থিতিতে পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দেওয়া হয়। গণমাধ্যমে এসব খবরাদি বিস্তারিত প্রকাশ পেয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধীদের দমন করার অজুহাত হিসাবে যে বাসে আগুন দেওয়ার এসব ঘটনাকে ব্যবহার করা হবে- তা স্পষ্ট।
তিনি বলেন, এসব হামলা, আক্রমণ, গ্রেপ্তার, নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রীয় ও সরকারদলীয়দের পরিকল্পিত নাশকতা দিয়ে সরকার তার শেষ রক্ষা করতে পারবে না। চলমান গণআন্দোলন ইতোমধ্যে গণজাগরণে পরিণত হয়েছে; অচিরেই যা গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
মন্তব্য করুন