গণহত্যায় নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ থাকতে পারে না বলে দাবি করেছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে এ দাবি করেন তিনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়।
রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্ট প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছিলো। কিন্তু জনগণ সেদিন তাদের বিপ্লব নস্যাৎ করে দিয়েছিলো। ২১ আগস্টকে কেন্দ্র করে এই চক্রান্ত করতে চেয়েছিলো। কিন্তু জনগণ মাঠে থাকায়, আওয়ামী লীগের চক্রান্ত সফল হয়নি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বসে নেই। তারা ধারাবাহিক চক্রান্ত করছে। দলীয় ব্যানারে নামতে নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যানারে তারা নামছে। হঠাৎ দাবি-দাওয়া নিয়ে সচিবালয়ের সামনে হাজারো মানুষ। এই দাবি ১৫ বছর না করে একযোগে সবাই কেন মাঠে? আমরা তথ্য পাচ্ছি, আওয়ামী লীগের লোকজন দেশকে অস্থিতিশীল করতে এসব প্রোগ্রামে লোকবল সাপ্লাই দিচ্ছে। বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে এ বিষয়ে সচেতন থাকবে হবে। এই সরকার আমাদের সরকার, এই সরকার রাষ্ট্র সংস্কার করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সুতরাং সরকারকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলবো- শেখ হাসিনার উস্কানির ফাঁদে পা দিলে বিপদে পড়বেন। শেখ হাসিনা আপনাদের কথা চিন্তা না করে পালিয়ে গেছেন। সুতরাং তার কথা শুনলে আপনাদেরও পালিয়ে যেতে হবে।’
রাশেদ খাঁন আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কী চায়? এই মুহূর্তে সবার দাবি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। গণহত্যায় নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। শোনা যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাগণ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের চিন্তা করছেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না। কারণ, এমন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের লোকজন সংসদে চলে যাবে। কিন্তু গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত কোনো দলের লোক জাতীয় সংসদে ঢুকবে- সেটি মেনে নিলে শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে তরুণদের গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো দুর্নীতিবাজ, মাফিয়াকে টাকা ছিটিয়ে এমপি হতে দেওয়া যাবে না। দেশটাকে আমাদের নতুন করে সাজাতে হবে। এই দেশকে নিয়ে ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ চক্রান্ত করতে না পারে, সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। শোনা যাচ্ছে সীমান্ত দিয়ে আওয়ামী লীগের এমপিরা পালাচ্ছেন। বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে বলবো, সীমান্ত পাহারা দিন। ওদেরকে পালাতে দেওয়া যাবে না। দীপু মনির মতো সকলকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ হাসান আল মামুন বলেন, ২১ আগস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ যাতে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে না পারে, সেজন্য আমরা গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। ছাত্র-জনতার এই অর্জন যাতে খুনি হাসিনা নস্যাৎ না করতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন বলেন, ফ্যাসিষ্ট সরকারকে হটিয়ে নতুন বাংলাদেশ এর সূচনা হয়েছে। এই বাংলাদেশকে সবাই মিলে এগিয়ে নিতে হবে, এটা সবার দায়িত্ব।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-মহানগর দক্ষিণের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইউনুস গাজী, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন