ইসলামী সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো এক সঙ্গে ঐক্যের মাধ্যমে বৃহৎ ইসলামী শক্তির ঘোষণা দিয়েছে আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখরা। পর্যায়ক্রমে সব ইসলামী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে।
রোববার (২৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইসলামিক ইন্টেলেকচুয়াল ফোরামের আয়োজনে ‘বর্তমান বাংলাদেশ : ওলামায়ে কেরামের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে ঘোষণা দেন জৈনপুরী দরবার শরিফের পীর ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীসহ সব পীর-মাশায়েখ, আলেম-ওলামা এবং ইসলামী স্কলাররা।
সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন ইসলামিক ইন্টেলেকচুয়াল ফোরামের সমন্বয়ক ড. এমরানুল হক, ফোরামের কর্মসূচি তুলে ধরেন আবু জাফর সালেহী, শিক্ষা কারিকুলাম ব্যাখ্যা করেন মাওলানা মুহিবুল্লাহ জামী, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমন্বয়ক বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাহ্ মোহাম্মাদ শামছুদ্দিন।
এছাড়া সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- সাইয়্যেদ কামালউদ্দিন জাফরী, মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান, মাওলানা খলিলুর রহমান নেছারাবাদী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস মোকামিয়া, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম আল মারুফ, মাও. শাহ্ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, মুহাদ্দিস আমিরুল ইসলাম বেলালী, শায়খ জামাল উদ্দীনসহ ছারছিনা, সিংগুলা, বানিয়াপাড়া, চাঁদপুর, মিরেরসরাই, মাগুরা দরবার শরিফের পীর সাহেব এবং তাদের প্রতিনিধিরা।
ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী বলেন, বাংলাদেশে ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সব হক্কানী আলেম, পীর-মাশায়েখদের একত্রিতভাবে রাজনৈতিক শক্তি গঠন করতে হবে। যেন প্রত্যেকটি সংসদীয় আসনে ইসলামিক দলের একজন প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে যেতে পারে। বাংলাদেশের রাজপথে আলেম-ওলামারা যুগ যুগ থেকে রক্ত দিয়ে আসছে; সর্বশেষ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন এবং ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনে অসংখ্য আলেম-ওলামাকে রক্ত দিতে হয়েছে। জালিম আওয়ামী সরকার তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারা নির্যাতন করেছে।
ঈমানী আকিদাগত মতবিরোধ ছাড়া সব দল ও পীরদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন ইসলামী দল গঠন করা হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে ইতোমধ্যে অনেক বিতর্কিত বিচারকরা দায়িত্ব পালন করেছে। তাদের করা বিচারগুলোকে পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে।
এ সময় সেমিনারের অন্য বক্তারা বাংলাদেশে ভারতের পানি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, চীনের সাহায্যে বাংলাদেশে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা যেতে পারে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে সব বাহিনী ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা এবং বিগত সরকারের সব ধরনের অপরাধের শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। তাছাড়া বর্তমান চক্রান্তমূলক শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করে ৯৩ শতাংশ মুসলমানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী ইসলামবান্ধব এবং অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল একটি টেকসই শিক্ষা কারিকুলাম সিলেবাস, পরীক্ষা পদ্ধতি ও নতুন বই রচনার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য ধর্মপরায়ণ একজন শিক্ষাবিদকে শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দানের পরামর্শ দেওয়া হয়। জাতীয় রাজনীতিতে আলেম ও ইসলামপন্থিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত, ৫ আগস্টকে স্বৈরাচার পতন দিবস এবং ছুটি ঘোষণা, শহীদদের জন্য দোয়া ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং আহতদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আন্দোলনের নামে কেউ যাতে ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকা এবং রাষ্ট্র সংস্কারে আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান হয়।
মন্তব্য করুন