কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচনের জন্য জনগণকে যেন রাস্তায় মরতে না হয় : গয়েশ্বর

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি : কালবেলা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করার জন্য জনগণকে যেন ফের রাস্তায় গুলি খেয়ে মরতে না হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সেই অনুরোধ জানাচ্ছি।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

গয়েশ্বর রায় বলেন, আমার পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ, একটা নির্বাচন আদায় করার জন্য জনগণকে যেন রাস্তায় গুলি খেয়ে মরতে না হয়। আপনারা সময় মতো নির্বাচনটা দেন তাতে আপনারা ফুলের পাপড়িতে ঢাকা পড়বেন। আপনাদের গলায় যত মালা পরাবে তত মালার ওজন আপনারা সইতে পারবেন না। আপনাদের আমরা সম্মানের সঙ্গে আনছি, সম্মানের সঙ্গেই বিদায় করতে চাই, আপনারা দায়িত্বটা পালন করেন। আর যদি আমাদের শেষ পর্যন্ত মাঠে নামান কতটুকু সময় টিকবেন সেটা একটু ভেবে দেখবেন।

তিনি বলেন, আশা করি আমাদের ধৈর্যের বাধ ভাঙ্গার আগেই অন্তর্বর্তী সরকার যথাযথভাবে নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। নির্বাচনের মাধ্যমে ফয়সালা হয়ে যাবে জনগণ কাকে ক্ষমতা দেবে। জনগণই দেশের মালিক, ক্ষমতার উৎস। সেই জনগণ যদি ১৯৭১ এর যুদ্ধের বিরোধীদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনে, আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে যাবে এজন্য এই সরকারকে রাখতে হবে যে অন্তর্বর্তী সরকার সারা জীবনের জন্য দরকার। আর তারা যতক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ-সবল না হবে, নতুন দল না হবে ততদিন পর্যন্ত নির্বাচন দেবেন না এটা তো পক্ষপাতিত্বমূলক।

গয়েশ্বর বলেন, এই সরকার যদি একবার পক্ষে যায় সেটা যদি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে তো আমাদের নিজ পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। এমন একটা দিন আসুক চাই না। যা হওয়ার হয়েছে, এখন একটা নির্বাচন হোক। আর যদি আসে তাহলে তো আমরা চুপ করে বসে থাকব তাও না।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা যে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছিলাম, যুগপৎ আন্দোলনের আগে ২০১৭ সালে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০৩০ ভিশন দিলেন। পরবর্তীতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব, এক দফার আন্দোলন করব কার বিরুদ্ধে, ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার বিরুদ্ধে। তখন আমরা ২৭ দফা উপস্থাপন করলাম এবং এই যুগপৎ আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলন যারা করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা দাঁড়াল ৩১ দফা। এই ৩১ দফা ৬২টি রাজনৈতিক দলের চিন্তা ভাবনার ফসল। তাহলে নতুন করে সংস্কারের জন্য আর নতুন দলের দরকার নাই। চেয়ার বানানোর জন্য তো আর বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারের দরকার নাই, চেয়ার বানাবে কাঠমিস্ত্রী। কাঠমিস্ত্রী বলতে আমি রাজনীতিবিদদের বলি, তারাই তো দেশ চালাবে, সংস্কার করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই যে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা, ইতিবাচক মনোভাব এটা তো কম কথা না। আমরা যে ভুলগুলো করেছি যার জন্য দেশের আজকের এই দুরবস্থা, সেটিকে সঠিক জায়গায় আনতে গেলে একটা স্বাধীন দেশের জন্য যে পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা দরকার সেটাই সংস্কার। আমাদের দেশের লোকজন সুন্দর লেখে, বলে। কিন্তু কাজ করার সময় তাদের আর পাওয়া যায় না। রাজপথে রক্ত দেয় সাইদ, নূর-আলম। এমনকি ভোটের দিন এই শিক্ষিত লোকগুলো বাড়িতে বসে টিভি দেখে, ভালোমন্দ খায়। লাইনে দাঁড়াইয়া ভোটও দিতে যায় না। কিন্তু একজন খামারি ঠিকই সারাদিন দাঁড়িয়ে ভোট দেয়।

তিনি বলেন, এখন আমাদের দেশের বুদ্ধিমান লোকদের আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এই বুদ্ধিমান লোকেরাই রাজনীতিবিদদের মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। আমরা রাজনীতি করি বলে তারা মনে করে আমরা মূর্খের দল, কোনো লেখাপড়া করি নাই। সে কারণেই আজকে যেসব জ্ঞানী, গুণি অন্তর্বর্তী সরকারে আছেন, যারা সমাজে সুন্দর সুন্দর কথা বলে তাদের কথা সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনতেছেন। আমাদের কথা শুধু একটা ফর্মালিটি যে বিএনপির সাথে আলোচনা হয়েছে, অমুক দলকে ডাকা হয়েছে। এতো ডাকাডাকির দরকারটা কী? নির্বাচনের পদ্ধতি তো আমাদের জানাই আছে। ভোটার তালিকা করবেন যা করবেন করে ফেলেন। একটা নির্বাচন দিয়ে দেন। আমাদের মতামতের দরকার কী? কোনো দরকার নাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা তো ৩১ দফা দিয়েই রাখছি। যে যে কমিশন বানাইসেন তাদের ৫ জনকে বসিয়ে দেন। সেখানে কী বাদ দিতে হবে, যোগ করতে হবে করেন, বা তাদের কোনো ভাবনা থাকলে দিতে পারেন। একেকটা কমিশন ২০০ পৃষ্ঠা, ৩০০ পৃষ্ঠা লিখে পাঠাবে আর সারা দিন এগুলো পড়ব, এটা হয়? হয় না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল বরিশালের আমড়া

এনসিপির প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানাল ইশরাকের আইনজীবী 

ফিলিস্তিনিদের জন্য মালয়েশিয়াস্থ চট্টগ্রাম সমিতির অনুদান

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ / ভারতের প্রতি সমর্থন, তবে পাকিস্তান প্রসঙ্গে প্রমাণ চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ইস্যুতে অপপ্রচারে ব্রিটিশ এমপিদের উদ্বেগ 

আজ নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ

এআই আর্মস রেস  / ইসলামি দেশগুলোকে নিয়ে বসছে ইরান

কেউ গোপনে ভালোবাসছে? জেনে নিন তার ৭টি লক্ষণ

রক্তাক্ত গাজা : ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট

১০

ইরানের জ্বালানি খাতে নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

১১

দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ শীর্ষে ঢাকা

১২

বন্ধুকে অপহরণ, মুক্তির শর্তে স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব

১৩

‘প্রভাব খাটিয়ে’ হাটের ইজারা পেলেন বিএনপি নেতারা

১৪

ফুলে সাজানো রিকশায় প্রধান শিক্ষকের বিদায়

১৫

মুক্তি পেয়েই জেলগেটের সামনে ফের আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৬

ইসরায়েলের গুপ্তচরকে ফাঁসিতে ঝুলাল ইরান

১৭

পাকিস্তানে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার আশঙ্কা

১৮

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার বিমান হামলা

১৯

ঢাকার আবহাওয়া আজ কেমন থাকবে

২০
X