নারীর অধিকার ও সংস্কার নিয়ে গঠিত কমিশনের সুপারিশসমূহকে ‘ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থী’ আখ্যা দিয়ে তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা শাখা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে মহিলা জামায়াতের সেক্রেটারি নূরুন্নিসা সিদ্দিকা এই প্রতিক্রিয়া জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া কমিশনের সুপারিশে এমন কিছু গর্হিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা দেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এই সুপারিশগুলো কোরআন ও হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা সমাজের মূল ধারার মূল্যবোধে আঘাত হেনেছে।
সবচেয়ে আপত্তিকর বিষয় হিসেবে তিনি যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি নারীর জন্য চরম অবমাননাকর এবং সমাজে অনৈতিকতা বিস্তারে সহায়ক হতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রবর্তনের সুপারিশের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক ও উত্তরাধিকারে একক রীতি চালু করতে বলা হয়েছে। এটি ধর্মীয় মতামত ও সংস্কৃতির প্রতি সরাসরি অবজ্ঞা। ইসলাম ‘সমান অধিকার’ নয়, ‘ন্যায্য অধিকার’ প্রতিষ্ঠার কথা বলে।
কমিশনের গঠন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নূরুন্নিসা সিদ্দিকা। তিনি বলেন, এই কমিশনের সদস্যরা সমাজের সব শ্রেণির নারীকে প্রতিনিধিত্ব করেন না। বিশেষ করে ইসলামী চিন্তাধারায় বিশ্বাসী বা ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন কোনো নারীকে সেখানে রাখা হয়নি।
তাই তিনি এই প্রতিবেদন বাতিল করে ইসলামভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুনভাবে প্রতিবেদন প্রণয়নের আহ্বান জানান।
এই বিবৃতি দেশের নারীবিষয়ক নীতিনির্ধারণ ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিরাজমান মতপার্থক্যকে আরও স্পষ্ট করেছে। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আধুনিক নারী অধিকারের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যকার ভারসাম্য কীভাবে প্রতিষ্ঠা হবে—এ প্রশ্নে সমাজে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।
মন্তব্য করুন