জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের জন্য রূপরেখা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার (০৬ মে) দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এ সংস্কার প্রস্তাব কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের কাছে হস্তান্তর করেন।
আখতার হোসেন বলেন, মৌলিক সংস্কারের মধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা বা আসন ভিত্তিক দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং তিনি ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা এবং বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্বকেই মৌলিক সংস্কারের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেন।
তিনি বলেন, এই ভিত্তি অর্জন করতে হলে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্র কাঠামো থেকে স্বৈরতান্ত্রিক এবং ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলো কীভাবে দূর করা যায়, সাংবিধানিক পদগুলোর নিয়োগে দলীয়করণের বাইরে এসে কীভাবে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া যায় এবং কীভাবে বিচারবিভাগকে রাজনৈতিকভাবে মুক্ত করে সত্যিকার অর্থে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়, এসব বিষয়কেও মৌলিক সংস্কারের অন্তর্ভুক্ত বলে আমরা মনে করি। এসব মৌলিক সংস্কারের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর রূপরেখা আমরা ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছি।
আখতার হোসেন বলেন, আমরা বারংবার বলে এসেছি গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ যে শাসন কাঠামোর মধ্যদিয়ে পরিচালিত হয়েছে এবং রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে যে স্বৈরতান্ত্রিক উপাদানগুলো থেকে গেছে, ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলো থেকে গেছে, তার কারণে বাংলাদেশের জনগণ নিপীড়িত ও নির্যাতিত হয়ে এসেছে। সেই স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী কাঠামো থেকে বাংলাদেশের সংবিধান ও রাষ্ট্রকাঠামোকে উত্তরণ ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে কীভাবে শামিল করতে পারি, সেই প্রচেষ্টার জায়গা থেকে বাংলাদেশের আপামর ছাত্রজনতা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ যাতে সার্থক হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন অতীতের মত ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরতন্ত্র কাঠামোর মধ্যে না থেকে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে নিজেদের শামিল করতে পারে, সেই জায়গায় এনসিপির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা হাজির করেছি।
এ সময় আখতার হোসেনের নেতৃত্বে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, জাভেদ রাসিন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন- কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
মন্তব্য করুন