আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বাংলাদেশের স্বার্থে অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক।
শনিবার (১০ মে) বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নিয়মিত মাসিক নির্বাহী বৈঠক রাজধানীর পুরানা পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন দলের আমির শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। সভা পরিচালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।
বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঘটনাবলির পর্যালোচনা হয়। বিশেষ করে আওয়ামী রাজনীতি নিষিদ্ধের চলমান আন্দোলন, নারী সংস্কার কমিশন, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা, পাক-ভারত সামরিক হামলা-পাল্টাহামলা ও সংগঠনের সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
সভায় মাওলানা মামুনুল হক দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী শাসক দল আওয়ামী লীগকে একটি সন্ত্রাসী, ধর্মবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যায়িত করেন বলেন, দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করতে, জাতিকে বিভক্ত, দুর্নীতিগ্রস্ত ও ইসলামী মূল্যবোধশূন্য করতে কোনো অপচেষ্টা নেই যা এই দলটি করেনি।
তিনি বলেন, আমি মনে করি- বিডিআর হত্যা, শাপলা-গণহত্যা, জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ হাজার হাজার খুন-গুম-অপহরণ সংঘটিত করেছে যেই দল, সেই দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বাংলাদেশের স্বার্থে অপরিহার্য।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা দেয়াল-লিখন আর গ্রাফিতি নিয়ে সংকলন করেছেন, দেশ-বিদেশে বিতরণও করছেন। এবার এগুলো নিজেরাও ভালো করে পড়ুন, দেখুন, অনুভব করুন। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তে রাঙানো বিপ্লব ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না।
সভায় মাওলানা মামুনুল হক নারী সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল দল-মত-ধর্মের মানুষের তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর আমরা আশা করেছিলাম সরকার এই ব্যর্থ কমিশনকে বাতিল করবে। কিন্তু তারা তা করেনি। বরং সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এই কমিশনের পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন। মনে হচ্ছে, সরকার নারী সংস্কার কমিশনের মোড়কে ‘ধর্ম সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে।
তিনি অবিলম্বে তথাকথিত নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের আহ্বান জানান। সভায় মাওলানা মামুনুল হক গাজায় অবিলম্বে ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ ও বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় কূটনৈতিক উদ্যোগ দাবি করেন।
পাশাপাশি তিনি পাক-ভারত চলমান সংঘর্ষ দ্রুত বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধ সমাধান নয়; আলোচনায়-ই সমাধান। কিন্তু আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রটি সব সময়ই আলোচনায় সময়ক্ষেপণ করে।
বৈঠকে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা কুরবান আলী, মাওলানা মাহবুবুল হক,যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মুফতি শরাফত হোসাইন, শরীফ সাঈদুর রহমানসহ প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতারা।
মন্তব্য করুন