একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পাওয়া জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (২৮ মে) সকাল সোয়া ৯টার দিকে মুক্তি পেয়ে তিনি শাহবাগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতারা।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড থেকে খালাস পান এটিএম আজহারুল ইসলাম। গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের ছয় ঘটনায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় গতকাল মঙ্গলবার বাতিল করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রিভিউ আবেদনের পর আপিলে প্রথমবারের মতো খালাস পেলেন কোনো আসামি। ছয় বছর আগে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষে এই রায় দেন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়া এই রায়ে আসামি আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়া হয়। এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গত বছরের আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় আপিল করেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলাম। এর আগে, ২০১৯ সালে আপিল বিভাগের তৎকালীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছিল।
দ্বিতীয় দফার আপিল শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত গতকাল (২৭ মে) তাকে খালাস দেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পরই দুপুরে বিচারপতিদের স্বাক্ষর শেষে সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয়। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিধি অনুযায়ী আজহারুলের মুক্তির আদেশ জারি করে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজারের নিজ বাসা থেকে এটিএম আজহার ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন