সম্প্রতি দখলদার ইসরায়েল ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মুসলিম দেশে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা চালিয়ে নতুন করে যে আগ্রাসনের সূচনা করেছে তার প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
শুক্রবার (২৭ জুন) বাদ জুমা রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ইসরায়েল এখন শুধু ফিলিস্তিন নয়, ইরানেও সরাসরি আগ্রাসন চালিয়ে মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব ও সম্মানকে চ্যালেঞ্জ করছে। ইরান সাহসিকতা ও ন্যায়ভিত্তিক প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে- অন্যায়ের জবাব একমাত্র সম্মিলিত প্রতিরোধেই সম্ভব।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। জাতিসংঘ, ওআইসি সবই নিষ্ক্রিয়। মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক জোট ছাড়া আমাদের রক্ষার পথ নেই।
শাহবাগপন্থিদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকার ঘোষিত মাসব্যাপী স্বাধীনতা অনুষ্ঠানমালায় শাহবাগপন্থি নাস্তিক্যবাদী দর্শনের প্রতিফলন চলবে না। আমরা ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’ ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের শহীদদের স্বীকৃতি, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। ইসলামী শক্তিগুলোর ঐক্য এখন সময়ের দাবি। নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের ঐক্য না হলে দেশ, ইসলাম ও স্বাধীনতা তিনটিই বিপন্ন হবে।
মব জাস্টিস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার জনগণের ক্ষোভকে অবজ্ঞা করছে। যারা ফ্যাসিবাদী দমননীতির সহযোগী ছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনুন।
আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল্লাহ হাদী, মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ছানাউল্লাহ আমিনী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ নোমান, যুব মজলিসের আল আবীদ শাকির, ছাত্র মজলিসের মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন হাসিব প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিশাল মিছিল পল্টন হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে গিয়ে সংগঠনের নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানীর দোয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
এছাড়াও সিলেট মহানগর, চট্টগ্রাম মহানগর, গাজীপুর মহানগর, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, মৌলভীবাজার সদর, নেত্রকোনা জেলা, মাদারীপুর জেলা, শ্রীমঙ্গল উপজেলা, খুলনা, রংপুর, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ফেনী, মানিকগঞ্জ, বরগুনা, নাটোর, কুমিল্লা, মাগুরা, রাঙ্গামাটি, সুনামগঞ্জ জেলা, এবং সাভার, বাহুবল, দেবিদ্বার, কালিগঞ্জ, মুরাদনগর, মাধবপুরসহ বহু উপজেলায় কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনে করে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক শক্তির নীরবতা সবই মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে গভীর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। এই চক্রান্ত মোকাবিলায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সাহসিকতা ও সুসংগঠিত প্রতিরোধই একমাত্র পথ।
মন্তব্য করুন