ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা যাদের নেই, তারাই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীতে তেজগাঁও ও শিল্পাঞ্চল থানা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কর্মসূচির দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমিনুল হক বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু সেই নির্বাচন বানচাল করতেই নতুন ফর্মুলা হিসেবে পিআর পদ্ধতি সামনে আনা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে একটি প্রতারণা।
তিনি বলেন, কিছু নতুন রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির কথা বলছে, এটা হাস্যকর। কারণ, এই পদ্ধতিতে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচিত হয় না। আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের সরব অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেনো, বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। কারণ মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে চায়। সে ব্যালটই হবে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের একমাত্র মাধ্যম।
তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বারবার আহ্বান জানিয়েছি, গত ১৫ বছরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখন মানুষ ভোট দিতে চায়। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করুন, যাতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এক বছর পার হতে চলল, অথচ কোনো সংস্কার হয়নি, স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার হয়নি। রাষ্ট্রীয় কোনো কাঠামোগত পরিবর্তনও দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা জুলুম-নিপীড়নের শিকার হয়েও রাজপথে আন্দোলন করে স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করেছে। তাই এই ত্যাগী, পরীক্ষিত, নিবেদিত কর্মীরাই সবার আগে দলের সদস্য পদ নবায়ন করতে পারবে।
সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, যারা দিনে বিএনপি আর রাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে, কিংবা ব্যবসা করে—সেই সুবিধাবাদীরা দলের সদস্য পদ নবায়ন করতে পারবে না। তবে যারা সমাজের ভালো মানুষ এবং বিএনপিকে ভালোবাসে, তাদের আমরা দলে সদস্য নবায়নের সুযোগ দেবো।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আমিনুল হক বলেন, আপনাদের হাত ধরে যেন ভুলেও আওয়ামী লীগের দোসররা বিএনপির সদস্য না হতে পারে—এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
শিল্পাঞ্চল থানা বিএনপির আহ্বায়ক আইনুল ইসলাম চঞ্চল ও তেজগাঁও থানা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মিরাজ উদ্দিন হায়দার আরজুর যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এ বি এম এ রাজ্জাক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত), গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন, মো. শাহ আলম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন