কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কিছু দল নির্বাচন নিয়ে ডাবল স্ট্যান্ডবাজি করছে : রিজভী 

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। ছবি : কালবেলা
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। ছবি : কালবেলা

জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু দল নির্বাচন নিয়ে ডাবল স্ট্যান্ডবাজি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (৬ জুলাই) দুপরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জামায়াতকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, আপনারা একটি রাজনৈতিক দল, আপনাদের অতীত নিয়ে কথা বলতে চাই না। মানুষ সবাই জানে। আজকে আপনারা বলেন, নির্বাচন পেছাতে হবে। কেন পেছাতে হবে? প্রায় দেড় বছরের কাছাকাছি- এর মধ্যে মানুষের প্রয়োজনীয় যে সংস্কার, সেই সংস্কার কি সম্ভব নয়? তাহলে নির্বাচনকে কেন আপনারা টার্গেট করেছেন? একদিকে বলছেন নির্বাচন পেছাতে হবে, আবার কোথাও কোথাও আপনারা নমিনেশন দিচ্ছেন। বলে আসছেন আপনারা, এইটা হলো আমাদের প্রার্থী। এটাও তো দ্বিচারিতা, ডাবলস্ট্যান্ডার্ড। নির্বাচন পেছানোর কথা বলছেন একদিকে, ওইদিকে নমিনেশনও দিচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, উনাদের সম্পর্কে আমাদের রাজনৈতিক যে স্টাডি, যুগ যুগ ধরে তারা জনগণের সেন্টিমেন্ট বুঝতে চায় না। যদি তারা জনগণের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারতো, তাহলে তারা একাত্তরের বিরোধিতা করত না। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার সাথে গিয়ে এরশাদের মতো একজন স্বৈরাচারের সাথে একটা ইয়ের নির্বাচনে তারা অংশ নিত না। জনগণের মূল্যকে তারা কোনোদিনই পাত্তা দিতে চায় না, তারা সব সময় নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লাভের আশায় কাজ করেন। আর এই ফায়দা লুটতে গিয়ে তারা বারবার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এখন নির্বাচন করলে দুই-তিনটার বেশি উনারা পান না। উনারা কোনোদিনই অঙ্গীকার রক্ষা করেননি, যেটি বেগম খালেদা জিয়া করেছেন, তারেক রহমানও অঙ্গীকার রক্ষা করেছেন।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছিলেন তাদেরও অনেকের এখনকার কথাবার্তা শুনে আমার কাছে ভিন্ন রকম মনে হয়।ইমাম হোসেনের কারবালার যে যুদ্ধ, যে যুদ্ধ অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দিয়েছিল এজিদ বাহিনী, সেই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত তিনি ন্যায়ের পতাকা দিয়ে লড়াই করে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। সেখান থেকে শিক্ষা তারা নিয়েছেন কি না জানি না। কয়েকদিন আগে বললেন নির্বাচনের পরিবেশ নেই, আবার বললেন নির্বাচন পেছাতে হবে। কেন নির্বাচন পেছাতে হবে? ১৫-১৬ বছরের যে আন্দোলন, এটা তো গণতন্ত্রের জন্য, তাহলে নির্বাচন কী দোষ করল? একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই যে এত আত্মদান, এত মানুষ অদৃশ্য হয়ে গেল, এত মানুষ গুম হয়ে গেল, আয়না ঘরে নিপীড়নের শিকার হলো, মা-মেয়ে নির্যাতন হলো, বছরের পর বছর মানুষকে আয়না ঘরে বন্দি করে রাখা হলো, অনেককেই আমরা এখনো খুঁজে পাইনি। অনেকের লাশ পাওয়া গেছে বিভিন্ন খাল-বিল, নদী-নালায়। এই ধরনের এজিদিও দুঃশাসনের ঘটনা ঘটেছে এই দেশে বিগত ১৫-১৬ বছর।

রিজভী বলেন, আমরা চেয়েছি- মানুষের নাগরিক অধিকার, প্রকৃত গণতন্ত্র। প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা থাকলে সত্য কথা উচ্চারণ করা যায়, ন্যায়ের পক্ষে সংগ্রাম করা যায়। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন মানুষের প্রত্যাশা, যেটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সম্পূর্ণ হবে। এটার জন্যই তো ১৫-১৬ বছরের লড়াই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের কী দোষ হলো যে, নির্বাচন পেছাতে হবে? এটা কি কোনো রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য বলা হচ্ছে? ইমেজ বৃদ্ধি করার জন্য তারা কি নির্বাচন পেছাতে চাচ্ছেন, এই প্রশ্ন তো আজকে জনগণ মনে মনে করছে। আমার মনে হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি কাউকে একটু সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্বাচনের সময় বৃদ্ধি করবেন না আশা করি। তারা সেই কাজে যাবেন না, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে সময়ের কথা তারা বলেছেন, সেই সময়ের মধ্যে তারা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির কবির খোকন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল হক জামাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, যুবদল নেতা ওমর ফারুক কাওসার প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জেন-জি বিক্ষোভের মুখে এবার দেশ ছেড়ে পালালেন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

আশুলিয়ায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার

‘নির্বাচনে পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করলে কঠোর ব্যবস্থা’

খাদ্য ফোরামে প্রধান উপদেষ্টার ৬ প্রস্তাব

রাকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারপত্র : মাটিতে ফেললেই জন্মাবে গাছের চারা

হজ নিবন্ধনে সাড়া নেই, এখনো ফাঁকা ৭৫ হাজারের বেশি আসন

চাকসু নির্বাচন / জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় শিবির, মরিয়া অন্যরাও

সালমান শাহর মৃত্যুর মামলার শুনানি শেষ, রায় চলতি মাসে

১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগান দিচ্ছে সরকার, আশ্রয়ে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা : প্রধান উপদেষ্টা

নাগরিক দুর্ভোগ নিরসনে সিটি করপোরেশনে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি

১০

‘৩১ দফা শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, আমাদের বাঁচার স্বপ্ন’

১১

রামুতে মিথ্যা মামলায় যুবক কারাগারে

১২

মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্যকে পাঠানো হলো ঢাকায়

১৩

মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত জকসু নীতিমালা, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষা

১৪

জাবিতে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে ১৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

১৫

বঙ্গ ফ্লেভার অ্যান্ড ফ্র্যাগরেন্স পরিদর্শনে জাইকা প্রতিনিধিদল

১৬

চাকসুতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য থাকছে আলাদা বুথ

১৭

বিশ্ববাজারে আবারও স্বর্ণের রেকর্ড দাম

১৮

আরও ছয় পুলিশ পেলেন বিপিএম ও পিপিএম পদক

১৯

ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ট্রাম্পের ভাষণে হট্টগোল, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির দাবি

২০
X