জনগণের কাঙ্ক্ষিত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রশাসনসহ অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষনেতা লায়ন মো. ফারুক রহমান।
তিনি বলেন, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম কচ্ছপ গতিতে চলতে থাকলে আমাদের গভীর সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি একটি ভালো নির্বাচনের জন্য। তাই সরকারকে বলব, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে গতি বাড়ান। দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ এর উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লায়ন ফারুক এসব কথা বলেন।
’২৪-এর গণঅভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে উল্লেখ করে ১২ দলীয় জোটের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, জাতি যেভাবে ১৯৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভুলে যায়নি, ঠিক একইভাবে ’২৪-এর বীর শহীদদেরও কখনো ভুলবে না। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় দেশের মানুষ সুন্দর ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষায় গণআন্দোলনে বারবার অকাতরে জীবন দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও সাম্য-ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন অধরাই থেকেছে। বারবার দেশের কাঁধে চেপে বসেছে ফ্যাসিবাদ আর অপশাসনের ভূত।
এই ধারার অবসান চেয়ে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমাদের প্রশ্ন, সবার প্রশ্ন– মানুষ কি তাহলে এভাবেই জীবন দিতে থাকবে? এই মানুষগুলো কিন্তু কানাডার বেগমপাড়ায় বসবাস, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কিংবা সুইস ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার দাবিতে আন্দোলন করেনি। তাদের দাবি ছিল, রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের শেকল ছিঁড়ে বাংলাদেশের মানুষ এখন মুক্ত। সেই গণআন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়, সেজন্য আমাদের এখনই উদ্যোগী হতে হবে।
লায়ন ফারুক বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আরও একবার ভুল করা চলবে না। জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের প্রতি জবাবদিহিমূলক নির্বাচিত-গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়েই শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। এর মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি আমাদের ঋণ পরিশোধের এখনই সময়।
সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম মেম্বার অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, ন্যাশনাল লেবার পার্টির দলীয় মুখপাত্র মো. শরিফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাইদুল ইসলাম আসাদ প্রমুখ। পরে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মন্তব্য করুন