চলমান একদফার আন্দোলন সফলে সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে রাজপথে নেমে আসার ডাক দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ডাক দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বড় দল-ছোট দল-মাঝারি দল, এটা বড় কথা নয়। বিএনপি নাকি নাগরিক ঐক্য নাকি গণসংহতি আন্দোলন না গণতন্ত্র মঞ্চ- এটাও বড় কথা নয়। আমাদের দেশ, আমাদের মানুষ আজকে বিপদগ্রস্ত, বিপন্ন। এদের অস্তিত্ব রক্ষা করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আসুন, আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে নেমে আসি এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। আজকে সেই সময় এসেছে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এনাফ ইজ এনাফ। এখন দয়া করে পদত্যাগ করে জনগণের একটা রাষ্ট্র, জনগণের একটা পার্লামেন্ট, জনগণের সমাজ তৈরি করবার ব্যবস্থা করে দিন। অন্যথায় পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। অতীতে দেখবেন ডিক্টেটররা কিন্তু পালাবার পথ খুঁজে পায়নি।
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকারের গুণকীর্তন করার তো দরকার নেই। দেশের মানুষ এদের পতন চায়, পদত্যাগ চায়। মানুষ আমাদের কাছে প্রশ্ন করে- ভাই, এই সরকার কবে যাবে?
তিনি আরও বলেন, এখন দেশের এবং বাইরের সমস্ত শক্তি এই সরকারের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ আমাদের সাথে রাজনৈতিক যুদ্ধে হেরে গেছে, আওয়ামী লীগ এখন একটা ঘৃণিত দল। তারা দেশের মধ্যে, দেশের বাইরে বিশ্বের কাছে ঘৃণিত। সারা পৃথিবী এখন শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ চায়। আমরাও পদত্যাগের জন্য একদফা নিয়ে লড়াই করছি।
সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে আমাদের রাষ্ট্রটাকে একটা দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে, একটা নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। তারা শুধু জনগণের অধিকার হরণ করেছে তাই নয়, জনগণের সম্পদ লুট করে এ দেশকে দেউলিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে পুরো রাষ্ট্রকে তার অস্তিত্বের দিক থেকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।
সরকারের পতন ও এ দেশকে রক্ষা করা আজ ‘এক বিষয়ে’ পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এই সরকারকে হটিয়ে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবুর সঞ্চালনায় এতে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ জাসদের নাজমুল হক প্রধান, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন