বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই কেয়ারটেকার সরকারের আদলে রূপ দিতে হবে। বিশেষ করে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ ও নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে এ মুহূর্ত থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে কেয়ারটেকার গভর্মেন্টের আদলে নিতে হবে। অর্থাৎ কেয়ারটেকার গভর্মেন্ট বলতে যা বুঝায়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় তাদের যেতে হবে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসেছিলাম আমাদের কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিএনপির মহাসচিবের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সন্ধ্যা ৬টার কিছুক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
যমুনায় প্রবেশের আগে প্রতিনিধি দলের সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উনি আজকে ৬টা সময় দিয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন এবং প্রশাসনের কিছু বিষয়সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টা সাথে কথা বলব।
বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে কেয়ারটেকারের আদলে রূপ দিতে হলে প্রথমেই যে বিষয়টি প্রয়োজন হবে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ একটা ধারণা জনগণের মধ্যে তৈরি করতে হবে। বিশেষ করে সচিবালয়ে যারা এখনো আছেন যাদেরকে চিহ্নিত ফ্যাসিস্টের দোসর বলা হয় তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, প্রশাসনেও জেলা প্রশাসন বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি যেগুলো আমরা মনে করেছি, তারা এখনো সেই পুরোনো ফ্যাসিস্ট সরকারের স্বার্থপূরণ করছে তাদের অপসারণের কথা বলেছি। সেইসঙ্গে পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যে সমস্ত নতুন নিয়োগ বা পদোন্নতি দেওয়া হবে সেই ক্ষেত্রে একদম নিরপেক্ষ অবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এসেছি, বিচার বিভাগে বিশেষ করে বিচার বিভাগের উচ্চপর্যায়ে এখনো ফ্যাসিস্টের যে সমস্ত দোসর আছেন তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারির ব্যাপার। তারপরও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সব সবকিছুর দায়িত্বে আছেন তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি। সরকারকে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য বিশেষ করে সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন তাদের অপসারণ করার জন্য দাবি জানিয়েছি। এটাই ছিল দেখার করার উদ্দেশ্য। প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেছেন কি না এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি বিএনপি নেতারা।
মন্তব্য করুন