গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, কথা পরিষ্কার- এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। ১৪ বছরের ভোটবঞ্চিত তরুণরা রাস্তায় নেমেছে, বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত তরুণরা কর্মসংস্থানের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। একদফা দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরবে না। ছাত্রলীগ-যুবলীগ-পুলিশলীগ দিয়ে জনতার কণ্ঠ রোধ করা যাবে না।
তিনি বলেন, স্বাধীন দেশে সব নাগরিকের রাজনীতি, সভা-সমাবেশ, সংগঠন করার অধিকার আছে। জামায়াতে ইসলামীরও রাজনীতি করার অধিকার আছে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে একদফার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা ওভারব্রিজের সামনে গণঅধিকার পরিষদের (নুর) পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নুর।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজকে আমরা রাস্তায় নেমেছি, ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাস্তায় নেমেছি। আমরা ভোট দিয়ে পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চাই, জনগণের ভোটের সরকার চাই। এটা বেআইনি কিংবা অন্যায় নয়। আমাদের দুঃখ ও দুর্ভাগ্য, এই কথা বলায় গত কয়েক মাসে বিরোধী মতের ৩০ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ডাকসুতে আমাদের ওপর ছাত্রলীগ-মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নারকীয় তাণ্ডব চালাল। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারিকে নিয়ে হাসপাতালে আমাদের দেখতে গেলেন। আর সেই মামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইয়ামিন, মশিউরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, অন্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে আজকে বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধীদের ১৪ বছর ধরে নির্যাতন করেছে। তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে পায়ে শিকল পরিয়ে ছয় মাস পর পর জামিনের নামে নাটক করছে- যাতে তিনি যেন রাজনীতি করতে না পারেন। কারণ, আজকে খালেদা জিয়া যদি রাজপথে থাকতেন, এই আন্দোলন আরও তুঙ্গে চলে যেত। সরকার সেটা বুঝতে পেরে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটক করে রেখেছে। আমরা গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মামুনুল হক, জামায়াতের আমিরসহ সবার মুক্তি চাই। স্বাধীন দেশে সব নাগরিকের রাজনীতি, সভা-সমাবেশ, সংগঠন করার অধিকার আছে। জামায়াতেরও রাজনীতি করার অধিকার আছে।
গণঅধিকার পরিষদের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কঠোর বার্তা দিল যে, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণ নির্বাচন না হলে জিএসপি সুবিধা বাতিল হতে পারে। সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ওপর ভিসা পলিসি শুরু হয়েছে। তারা আমেরিকা, কানাডার ভিসা পাচ্ছে না। অঘোষিত এমন অনেকের ওপর ভিসা আরোপ শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে আরও ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে। সুতরাং ভোট চুরি করে সুখে থাকার দিন আর নেই। সরকার আবারও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ আর ‘১৪ ও ’১৮ মার্কা নির্বাচন হতে দিবে না।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চারনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনিম, আব্দুজ জাহের, অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া, রিয়াজ প্যাদা, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি তারিকুল ইসলাম, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে উত্তর বাড্ডা ওভারব্রিজের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে রামপুরা ব্রিজে এসে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন