বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে সমাবেশের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়নি বরং পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। ভয়ভীতি প্রদান, গ্রেপ্তার বা কোনো ধরনের বাধা দিয়ে আওয়ামী লীগ এবারের আন্দোলন বন্ধ করতে পারবে না। মানুষ এবার আন্দোলন করে বিজয় ছিনিয়ে আনবেই।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি স্টেপই ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সেটা দেখে লাভ নেই, জনগণ জেগে উঠেছে। বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি করে। তারা আবারও তাই করবে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বারবার সন্ত্রাস করে ক্ষমতায় আসা তাদের মজ্জাগত অভ্যাস। আবারও তারা সে পথ বেছে নিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে একতরফা নির্বাচন করতে চায়। যাতে জনগণ ভোটকেন্দ্রমুখী না হয়।
আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তার ও তল্লাশি করার ক্ষমতা দিয়ে সংসদে যে বিল উত্থাপন করা হয়েছে তার তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আনসার বাহিনী প্রকৃতপক্ষে প্রশিক্ষিত কোনো বাহিনী নয়। তাদের এ ক্ষমতা দেওয়ার আইন পাস থেকে সরে আসারও আহ্বান জানান তিনি। আনসার বাহিনীকে অনেকটাই আধুনিক করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আর সেটিকে রাজনীতিকরণ করার চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ।
বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে। বেশ উদ্বেগজনক অবস্থায় আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিএনপি মহাসচিব গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সমাবেশে হামলার বিষয়ে বলেন, ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বাহারের নির্দেশে হয়েছে। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগ যুবলীগ সরাসরি জড়িত। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছেন। এর ভিত্তিতে তারা কিছু সুপারিশ করেছেন। সুপারিশসমূহ হলো-
১) গত ১৩ অক্টোবর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমতাবস্থায় স্থানীয় বিএনপির নেতাদের তাদের পাশে থাকা অত্যন্ত জরুরি।
২) উক্ত ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। অথচ হামলাকারীরা সকলেই চিহ্নিত। দুজন ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হলেও বাকিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ স্থানীয় প্রশাসনের নির্লিপ্ততা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ওই ঘটনার মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে প্রভাবমুক্ত থেকে সঠিক তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো যেতে পারে।
৩) স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব এ কে এম বাহাউদ্দিন বাহার পুরো কুমিল্লায় একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষোভ পরিলক্ষিত হয়। তাকে এই বর্বরোচিত হামলার হুমকিদাতা হিসেবে আসামি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো যেতে পারে।
এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল সোমবার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি দলের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ।
মন্তব্য করুন